ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে দিয়ে ভারতের ছয়ে ছয়

|

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপের ২৯তম ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১০০ রানে হারিয়ে টানা ৬ষ্ঠ জয়ে তুলে নিয়েছে ভারত। আগে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক রোহিত শর্মার ৮৭ রানের ইনিংসের ওপর ভর করে ২২৯ রানের পুঁজি পায় ভারত। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতীয় বোলারদের তাণ্ডবে ৯১ বল বাকি থাকতেই মাত্র ১২৫ রানে গুটিয়ে যায় ইংলিশরা। এই জয়ের ফলে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করলো রোহিত শর্মার দল। অন্যদিকে, টানা ৪ ম্যাচ হেরে সেমির আশা প্রায় শেষ বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের।

রোববার (২৯ অক্টোবর) লক্ষ্ণৌর ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী একনা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের দেয়ার ২৩০ রানের মাঝারি লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিল ইংল্যান্ড। মাত্র ৪ ওভারেই ২৬ রান তুলে ফেলে ইংলিশ দুই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো ও দাউয়িদ মালান। এরপরই শুরু হয় ইংলিশ ব্যাটারদের ছন্দপতন। নিজের তৃতীয় ও দলের পঞ্চম ওভার করতে এসে জোড়া উইকেট তুলে নেন বুমরাহ। ১৬ রান করা মালানকে বোল্ড এবং লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে শূন্য রানে জো রুটকে ফেরান এ ভারতীয় পেসার।

৪ নম্বরে ব্যাট করতে আসা বেন স্টোকসও দলের হাল ধরতে পারেননি। ক্রিজে আসার পর ধুঁকতে থাকা স্টোকসকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান মোহাম্মদ শামি। ১০ বলে কোনো রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। এরপর দলকে বিপদে ফেলে বিদায় নেন বেয়ারস্টো। মোহাম্মদ শামির গুড লেন্থের বল ব্যাটের কানায় লেগে স্ট্যাম্পে আঘাত হানলে ১৪ রান করেই ফিরতে হয় এই ইংলিশ ওপেনারকে।

৩৯ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর জস বাটলার ও মঈন আলীর হাতে সুযোগ ছিল ইংল্যান্ডকে টেনে তোলার। তবে ভারতীয় বোলারদের সামনে ন্যুনতম প্রতিরোধ গড়তে পারেননি দু’জনের কেউই। কুলদীপ যাদবের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন বাটলার। শামির লেন্থ ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মঈন। ফেরার আগে ১৫ রান করেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। উইকেটে কিছুটা থিতু হয়েছিলেন লিয়াম লিভিংস্টোন। তবে এই ডানহাতি ব্যাটার ২৭ রানে ফিরলে স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় ইংল্যান্ডের। শেষ দিকে ডেভিড উইলির অপরাজিত ১৬ রান কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে।

ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ শামি। এছাড়াও তিনটি উইকেট নেন জাসপ্রিত বুমরাহ। কুলদীপ যাদব নেন ২টি এবং রবীন্দ্র জাদেজা পান ১টি উইকেট।

এর আগে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ভারতীয় দুই ওপেনারকে চাপে রাখে ইংলিশ পেসাররা। প্রথম ২ ওভারে ভারত আজ নিতে পেরেছে মাত্র ৪ রান। এরপর তাণ্ডব চালান রোহিত শর্মা। কিন্তু নিজেদের ওপেনিং জুটিকে বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেননি। দলীয় ২৬ রানে শুভমান গিলের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ১৩ বলে ৯ রান করা শুভমান গিল ক্রিস ওকসের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন।

ক্রিজে এসে হতাশ করেছেন ফর্মের তুঙ্গে থাকা ভিরাট কোহলি। রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ডেভিড উইলির বলে মিড অফে বেন স্টোকসের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন কোহলি। ৪ নম্বরে ব্যাট করতে আসা শ্রেয়াস আইয়ারও দলের হাল ধরতে পারেননি। মাত্র ৪ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। ক্রিস ওকসের শর্ট লেন্থের বলে টপ এজ হয়ে মার্ক উডের হাটে ধরা পড়েন শ্রেয়াস। ফলে মাত্র ৪০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে রোহিত শর্মার দল।

৫ম উইকেট জুটিতে রোহিত শর্মা ও লোকেশ রাহুলের ব্যাটে শুরুর এই ধাক্কা সামাল দেয় ভারত। এই দুই ব্যাটার মিলে ৮৯ রানের জুটি গড়েন। দলীয় ১৩১ রানে ৫৮ বলে ৩৯ রান করে আউট হন রাহুল। ডেভিড উইলির গুড লেন্থের ডেলিভারিতে পুল শট খেলতে গিয়ে টপ এজ হয়ে মিড অনে দাঁড়িয়ে থাকা জনি বেয়ারস্টোর হাটে ধরা পড়েন তিনি। ক্যারিয়ারের ৫৪তম ফিফটি তুলে নেয়ার পর সেঞ্চুরির পথেই এগোচ্ছিলেন রোহিত। কিন্তু আদিল রশিদের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লিয়াম লিভিংস্টোনের হাতে ধরা পড়েন এ ডানহাতি ব্যাটার। ১০১ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৭ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক।

রোহিতের বিদায়ের পর দ্রুতই আরও দুই উইকেট হারায় ভারত। আদিল রশিদের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন রবীন্দ্র জাদেজা। ক্রিজে এসেই মার্ক উডের বলে জস বাটলারের হাটে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ শামি। এরপর সুরিয়া কুমার যাদবের দৃঢ়তায় ২০০ পার করে। সঙ্গে জাসপ্রিত বুমরাহও (১৬) অবদান রাখেন। ৪৭ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৯ রানে ফেরেন সুরিয়া। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৯ রান সংগ্রহ করে ভারত। ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন ডেভিড উইলি। এছাড়াও ক্রিস ওকস ও আদিল রশিদ শিকার করেন দু’টি করে উইকেট। মার্ক উড নেন ১টি উইকেট।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply