বর্বরতা আর শিশুহত্যায় ৩ সপ্তাহে রাশিয়াকেও ছাড়িয়ে গেলো ইসরায়েল

|

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে গত দেড় বছরে যত শিশুর মৃত্যু হয়েছে, মাত্র তিন সপ্তাহেই গাজায় তার চেয়ে ছয়গুণেরও বেশি শিশু হত্যা করেছে ইসরায়েল। গাজায় যে হারে আগ্রাসন চালাচ্ছে দখলদার বাহিনী, তাতে বেসামরিকদের হত্যার সংখ্যায়ও মস্কোকে শিগগিরই ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর হলেও, এ আগ্রাসনে নেতানিয়াহুর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে পশ্চিমারা। খবর আল জাজিরার।

রোববার (২৯ অক্টোবর) পর্যন্ত গাজায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮ হাজারের বেশি। এতে আহত হয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা তিন হাজার ৩০০ ছাড়িয়েছে। ধ্বংসস্তূপের ভেতর নিখোঁজ প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি। এর মধ্যে এক হাজারই শিশু। এছাড়া দখলকৃত পশ্চিমতীরে নিহত আরও শতাধিক, আহতও প্রায় দুই হাজার।

ভয়াবহ নৃশংসতার শিকার ফিলিস্তিনিরা ক্ষোভ জানিয়ে বলছেন, ফিলিস্তিনিদের ধ্বংসের মিশনে নেমেছে ইসরায়েল। ১৯৬৭ সালে আমাদের শহর আশকেলন থেকে আগেই আমাদের বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। এর আগে, ১৯৪৮ সালে আমার পূর্বপুরুষকে বাড়ি থেকে তাড়ানো হয়েছিল। এখন যতকিছুই হোক আমি কোথাও যাবো না। ফিলিস্তিনের একজনও যদি, গাজায় থাকে সেটাই হবো আমি ইনশাআল্লাহ।

এর আগে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে সেই যুদ্ধ চলছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার এই চলমান আগ্রাসনকে বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় সংকট।

জাতিসংঘের তথ্য বলছে, চলমান এ যুদ্ধে ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইউক্রেনে ৯ হাজার ৬১৪ বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৫৫৪। আহত হয়েছে ১৭ হাজার ৫৩৫ ইউক্রেনীয়।

এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই পশ্চিমাদের তোপের মুখে রাশিয়া। একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে দেশটির ওপর। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি।

এদিকে, মাত্র তিন সপ্তাহের আগ্রাসনেই ইউক্রেনের চেয়ে ছয়গুণেরও শিশুর মৃত্যু দেখেছে গাজা উপত্যকা। মোট মৃতের সংখ্যার ব্যবধানও খুব সামান্য। তবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যেভাবে কঠোর হয়েছে পশ্চিমারা, ইসরায়েলের ক্ষেত্রে অবস্থান তার ঠিক উল্টো। মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তোলা হলেও যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ সব পশ্চিমা দেশই তেলআবিবের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

পশ্চিমাদের এই এক চোখা আচরণে ক্ষোভ বাড়ছে নাগরিকদের মধ্যেই। পশ্চিমা বিভিন্ন দেশেও ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ করছেন শতশত মানুষ। এমনকি বিভিন্ন দেশে বসবাসরত খোদ ইহুদিরাই ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছন। অথচ প্রতিবাদ করায় তাদের ওপরই ধরপাকড় চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply