অবরোধের প্রথম দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত

|

বিচ্ছিন্ন সংঘাতের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী চলছে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় এই কর্মসূচি। অবরোধের প্রথম দিন সকালে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে সাইনবোর্ড এলাকায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ সময় সড়কে আগুন ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে ধাওয়া দিলে মহাসড়ক থেকে সরে যান বিক্ষোভকারীরা।

এদিকে, বন্দরের মদনপুর দেওয়ানবাগ এলাকায় দু’টি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেয় পিকেটাররা। চলন্ত যানবাহনে ইটপাটকেলও ছোড়া হয়। এছাড়া, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আড়াইহাজারে বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

এছাড়াও, রূপগঞ্জের পূর্বাচলের তিনশো ফিট এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে অবরোধ পালনকারীরা। এ সময় তারা লাঠি মিছিল, যানবাহন ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

সকালে কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের জাগড়ঝুলি এলাকায় সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশের বাধার মুখে পড়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তারা। পরে দু’পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি, টিয়ারশেল ছোড়ে পুলিশ। এতে অন্তত ৫ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

সিলেটের দক্ষিণ সুরমা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের অতীরবাড়ি এলাকায় সড়ক অবরোধ কর্মসূচিতে ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশের গাড়িতে ইটপাটকেল নিক্ষেপের খবর পাওয়া গেছে। ডালিমপুর এলাকায় বাসে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। পরে পুলিশ এসে ধাওয়া করলে পালিয়ে যায় তারা।

অবরোধের সমর্থনে মিছিল বের করে মানিকগঞ্জেও পুলিশের সাথে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে বিএনপি নেতাকর্মীদের। সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানরা এলাকায় এ ঘটনা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থানের মধ্যদিয়ে রংপুরে পালিত হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচি। বিজিবি ও র‍্যাবের টহল অব্যাহত আছে। মহাসড়কগুলোতে দূরপাল্লা ও পণ্যবাহী পরিবহণের চলাচল কম রয়েছে।

লক্ষ্মীপুরেও অবরোধের প্রথম দিনে সকাল থেকেই রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। জেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। শহরের বিভিন্ন স্থানে সর্তক অবস্থায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

ঢিলেঢালাভাবেই সিরাজগঞ্জে চলছে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ কর্মসূচি। সড়কে যানবাহনের চলাচল দেখা যায়নি। দুর্ভোগে কর্মজীবী মানুষ। শহরের বিভিন্ন সড়কে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুর্জয় মোড় এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের অবরোধকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বিএনপি দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পুলিশ। সংঘর্ষে গণমাধ্যমকর্মীসহ ১৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনার পর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।

এছাড়া, দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও সড়কে যানবাহনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবী মানুষ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়্ন্ত্রণে বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে পুলিশ।

এএস/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply