চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। রাজনীতি-অর্থনীতির পাশাপাশি শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। সংকট সমাধানে দলগুলোর মধ্যে আন্তরিক যোগাযোগ বাড়িয়ে সমাধানের পথ খোঁজার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ইস্যুতে সমঝোতা না হলে বিপদ বাড়বে।
আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সারাদেশে হরতাল, এরপর পর টানা তিনদিনের অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বিরোধী দলের এমন কর্মসূচি সামনে আরও আসবে।
বর্তমানে রাজনৈতিক প্রাঙ্গনে মূল যে সংকট সেটি হলো, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এটির সমাধানের সম্ভাবনা এখনও দৃশ্যমান নয়। ফলে চলমান এই অস্থিরতা, পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আর তা কেন্দ্র করে মানুষের মৃত্যু-ভোগান্তি এসব খবরে দেশ ছাড়িয়ে বহির্বিশ্বেও ফের আলোচনায় এসেছে বাংলাদেশ। নিজ দেশ নিয়ে নেতিবাচক এসব আলোচনায় অস্বস্তিতে তরুণরাও। তারা বলছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতা বাইরের দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশ সম্পর্কে খুব ভালো বার্তা যাচ্ছে না। যা দেশের ভাবমূর্তিতে ক্ষুণ্ন করছে, সেই সাথে দেশের মানুষের দৈনিক জীবনযাপনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত ও সহিংসতা বন্ধে ভিসানীতিসহ যুক্তরাষ্ট্রের নানা উদ্যোগ, পরামর্শ থাকলেও তা এখনও কাজে আসেনি খুব একটা। সবশেষ শর্তহীন সংলাপের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
অনেকেই বলছেন, হরতাল-অবরোধ পালন বা প্রতিরোধের নাম, যা হচ্ছে, তাতে নষ্ট হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি। করোনার পর রুশ ইউক্রেন যুদ্ধ, সব মিলিয়ে অর্থনীতির যে কঠিন দশা, তাতে রাজনৈতিক অস্থিরতা যুক্ত করবে নতুন মাত্রা। তাই সংকট সমাধানে খোলা মনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কার্যকর আলোচনার তাগিদ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রাশেদা রওনক খান বলেন, বহির্বিশ্বের যে যোগাযোগগুলো ছিল, সেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতির দৈন্যতার কারণে আমরা পিছিয়ে পড়বো। সরকারকে সুষ্ঠু নির্বাচনের দিকে নিয়ে যেতে কীভাবে বাধ্য করা যায়, সেটা থাকবে বিরোধী দলের দায়িত্ব। অন্যদিকে সরকারের দায়িত্ব হবে বিরোধী দলের সাথে আলোচনায় যাওয়া।
দেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলেন, এই সমস্যার একটি টেকসই সমাধান হতে পারে অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু নির্বাচন। অন্যথায় দীর্ঘমেয়াদী জটিলতার মধ্যে আমাদের পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
ভোগান্তি কমাতে আপামর জনসাধারণের চাওয়া-পাওয়াকে রাজনীতিকরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন বলেও প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের।
এসজেড/
Leave a reply