দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন করবে বিএনপি, আরও কঠোর কর্মসূচি দিবে

|

শরিফুল ইসলাম খান:

যত প্রতিকূলতাই আসুক সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি। সাম্প্রতিক গ্রেফতার, হামলা-মামলাকে চরম সংকট মনে করলেও সহসাই চলমান আন্দোলন বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই দলটির। বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে তা জানা গেছে।

তারা বলছেন, সাংগঠনিক কাঠামো ধাপে ধাপে সাজানো আছে,  তাই নেতৃত্ব সংকটের শঙ্কাও নেই। বরং আরও কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে।

মূলত, গত ২৮ অক্টোবর দুপুরের পর থেকেই দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেশ পরিবর্তন ঘটে। পরদিন গ্রেফতার হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনেক নেতা। এরপর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন কেন্দ্র-তৃণমূলের বেশিরভাগ নেতাকর্মী। যদিও তাদের দাবি, রাজধানীতে মহাসমাবেশ ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না।

এমন বাস্তবতায় আন্দোলন এগিয়ে নিতে নেতৃত্বের সংকট অনুভব করছে কি বিএনপি? এমন প্রশ্নে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমি এটি মনে করি না। বিএনপি একটি কর্মীনির্ভর দল। এছাড়া এরকম পরিস্থিতিতে বিএনপি অনেকবারই পড়েছে।

এদিকে, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশনা মেনে দলটির কর্মী-সমর্থকরা দেশের বিভিন্ন স্থানে মিছিল-পিকেটিং চালিয়ে যাচ্ছে। আর মাঠ পর্যায়ের কোনো নেতা গ্রেফতার হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই শূন্য পদে আরেকজনকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া জোনভিত্তিক কর্মসূচি পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোকে।

এ বিষয়ে কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আজকে ১ কোটি মানুষ ঘরছাড়া। মুক্তিযুদ্ধের মতো একটা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

বিএনপির সহ-সেস্বচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে আমরা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ। এ লড়াই শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ থেকে কেউ পিছপা হবে না।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পুলিশি তৎপরতায় বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী ঘর-বাড়ি ছাড়া। বিরাজ করছে গ্রেফতার আতঙ্ক। এ প্রসঙ্গ ২০১৮ সালের নির্বাচনে ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম ফিরোজ অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নেতাকর্মীদের না পেলে তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার করছেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, যদি একটি ইউনিয়নের প্রথম পর্যায়ের নেতা গ্রেফতার হন তাহলে সে কমিটির সর্বশেষ সদস্য নেতৃত্ব দেবে।

এছাড়া, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপিতে আবারও ভাঙার ধরানোর চেষ্টা চলছে বলে গুঞ্জন জোরালো হচ্ছে। সব মিলিয়ে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে দলটি। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সে সম্পর্কে জানেন না বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

/আরএইচ/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply