নির্বাচনকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জের ৩টি আসনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রায় ডজন খানেক। মাঠে নানা প্রচারণার পাশাপাশি কেন্দ্রেও জোর লবিং চালাচ্ছেন তারা। তবে নির্বাচনী মাঠে প্রচারণায় নেই বিএনপি। অন্যদিকে প্রার্থী প্রস্তুত জাতীয় পার্টির। এখন কেন্দ্রের অবস্থানের দিকে তাকিয়ে আছেন তারা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জে শুরু হয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তোড়জোড়। একসময় বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এই জেলার সবকটি আসন আওয়ামী লীগের দখলে রয়েছে টানা তিন মেয়াদে। এবারও মানিকগঞ্জ-১ আসনে ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা সবেচেয়ে বেশি। সংসদ সদস্য নাঈমুর রহমান দুর্জয়সহ মনোনয়ন দৌঁড়ে আছেন বেশ কয়েকজন নতুন-পুরনো মুখ। দলীয় কর্মসূচি আর নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে নৌকার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা।
নাঈমুর রহমান দুর্জয় জানান, এলাম আর ২ মাস কাজ করে প্রার্থী হয়ে গেলাম, প্রক্রিয়াটি এত সহজ না। দীর্ঘদিন ধরে কারা মানুষের পাশে আছে, কে মানুষের জন্য কাজ করেছে সেগুলোই বিবেচ্য বিষয় হবে।
অন্যদিকে মানিকগঞ্জ-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী এস এম জাহিদ বলছেন, জনপ্রিয়তা যাচাই করে মনোনয়ন দেয়া হবে। জনপ্রিয়তার বিবেচনায় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে আমি শতভাগ আশাবাদী।
ক্ষমতাসীন দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছে মানিকগঞ্জ-২ আসনেও। বর্তমান এমপি কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের পাশাপাশি মনোনয়ন চাইছেন অন্তত ৫ জন। তাদের ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে এলাকা। তবে দলের ত্যাগী নেতাদের সাথে এমপির দূরত্বে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যরুপ নেয়ায় এই আসনটি বেশি আলোচনায় রয়েছে।
মমতাজ বেগম বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে যোগ্য মনে করেন, তাহলে মনোনয়ন পাবো। তবে জনপ্রিয়তার বিবেচনায় শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার কাছেই পরিচিত মুখ আমি।
এই আসনের আরেক মনোনয়ন প্রত্যাশী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু জানালেন, সকলেই আমাকে ব্যাপক সাড়া দিচ্ছে। চেয়ারম্যানদের অনুপ্রেরণায় আমি এই মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের আসন মানিকগঞ্জ-৩ এ মনোনয়ন প্রত্যাশীর সংখ্যা সবচেয়ে কম। মাঠের প্রচারণায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের কম দেখা গেলেও, অনেকেই কেন্দ্রে লবিং চালাচ্ছেন। এই আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু বলেন, মনোনয়ন পেয়ে আমি যদি জয়ী হই, তাহলে এই মানিকগঞ্জকে আমি একটি স্মার্ট সিটি বানাতে চাই।
জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, তিনটি আসনেই একাধিক প্রার্থী থাকলেও নৌকার পক্ষেই কাজ করছেন তারা।দলীয় প্রার্থী ঘোষণার পর বিভেদ-বিভক্তি থাকবে না উল্লেখ করে মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন বলেন, দলের নেতাকর্মীদের জন্য একজন এমপি সবচেয়ে বড় চাওয়া-পাওয়া। এমপি হলেই মন্ত্রী হওয়া যায়। এটি আরও বড় চাওয়া-পাওয়া। তাই সেখানে প্রতিযোগিতা থাকবেই।
তিনটি আসনে বিএনপিরও রয়েছে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী। তবে এই মুহূর্তে আন্দোলন ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছেন না তারা। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তিন আসনেই বিএনপির জয় হবে বলে দাবি নেতাদের।
মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ কবির জিন্নাহ বলেন, আগামী নির্বাচন গণতান্ত্রিকমনা দলগুলোকে নিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হোক এই এক দফা দাবিতে বিএনপি এখন রাজপথে রয়েছে।
২০০৮ সালের পর জেলায় এমপি পায়নি জাতীয় পার্টি। এবার তিন আসনেই প্রার্থী দেয়ার প্রস্ততি থাকলেও, তারা তাকিয়ে আছেন দলীয় সিদ্ধান্তের দিকে। জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে অন্তত দুটি আসন চাইবে তারা।
জেলা জাতীয়পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ হাসান সাঈদ বলেন, আমাদের প্রার্থী প্রস্তুত আছে। তবে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমরা আবারও পর্যালোচনা করছি।
মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে ৭টি উপজেলায় ভোটার সংখ্যা ১২ লাখ ৬৩ হাজার। নতুন ভোটার এক লাখেরও বেশি।
এসজেড/
Leave a reply