বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে ভিরাট কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ারের জোড়া সেঞ্চুরি এবং শুভমান গিলের হাফ সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৯৭ রান সংগ্রহ করেছে ভারত। এদিন, ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথম ব্যাটার হিসেবে ৫০টি সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড গড়েন ‘কিং’ কোহলি। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ৩৯৮ রান।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের প্রথম ওভারেই ট্রেন্ট বোল্টকে পরপর দুই বলে দুই বাউন্ডারি মেরে ঝড়ের পূর্বাভাস দেন রোহিত শর্মা। ভারতীয় অধিনায়কের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩২ বলে দল ও উদ্বোধনী জুটির রান পঞ্চাশ স্পর্শ করে।
ওয়াংখেড়ের স্লো-উইকেটে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি নিউজিল্যান্ডের বোলাররা। বোল্ট-সাউদিরা পিচ থেকে সুইং আদায় করে নিতে পারেননি। তাদেরকে বেধড়ক পেটাতে থাকেন রোহিত। তবে রোহিত ঝড় থামান সাউদি। এই কিউই পেসারের স্লোয়ার বলে টাইমিং করতে পারেননি ভারতীয় অধিনায়ক। টপ এজ হয়ে বল উঠে যায় অনেক উঁচুতে, মিড অফ থেকে অনেকটা পেছন দিকে গিয়ে শেষ মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নেন উইলিয়ামসন। ভাঙে ৫০ বল স্থায়ী ৭১ রানের জুটি। ২৯ বলে চারটি করে ছক্কা ও চারে ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন রোহিত।
এরপর গিলকে নিয়ে ভারতকে এগিয়ে নিতে থাকেন কোহলি। শুরুতে একটু ধীরগতিতে খেললেও ৪১ বলে ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন গিল। দারুণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন তরুণ এই ওপেনার। যদিও শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি পাওয়া হয়নি। সিঙ্গেল নিতে গিয়ে অস্বস্তিতে ভোগায় ৬৪ বলে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে মাঠ ছাড়েন গিল। কোহলিকে সঙ্গ দিতে চারে আসেন আইয়ার। তারা দু’জনে মিলে নিউজিল্যান্ডকে রীতিমতো চাপে ফেলে দেন। রাচিনের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ৫৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কোহলি। বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে যা তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি।
এরপর ৮০তম রান নেয়ার সময় কোহলি ছাড়িয়ে যান শচীন টেন্ডুলকারকে। ২০০৩ সালের আসরে ১১ ইনিংসে ৬৭৩ রান করেছিলেন টেন্ডুলকার। ২০ বছর পর এক ইনিংস কম খেলেই তাকে টপকে গেলেন কোহলি। এরপর ১০৬ বলে পান সেঞ্চুরির দেখা। একইসঙ্গে শচীনকে তিনি ছাড়িয়ে যান আবারও। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ৫০টি শতক এখন কেবল ‘কিং’ কোহলির দখলে।
১২৮ বলে ১৬৩ রানের জুটি গড়ার পর সাউদির বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে বিদায় নেন কোহলি। ১১৩ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ১১৭ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন এই মহাতারকা। তবে অন্যপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে যান শ্রেয়াস। মাত্র ৩৫ বলে প্রথম ফিফটি ছুঁয়ে পরের ফিফটি পূর্ণ করেন ৩২ বলে। আসরে এটি তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তবে সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি শ্রেয়াস। ট্রেন্ট বোল্টের বলে শর্ট বলে লং অনে ড্যারিল মিচেলের হাতে ধরা পড়েন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। ৭০ বলে ৮টি ছক্কা ও ৪টি চারে ১০৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন শ্রেয়াস।
শেষদিকে আবারও ব্যাট করতে নামেন ইনজুরিতে মাঠ ছাড়া গিল। তবে এই যাত্রায় তার ব্যাট থেকে আসে কেবল এক রান। আর লোকেশ রাহুলের ২০ বলে ৩৯ রানের ক্যামিওতে ৩৯৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় স্বাগতিকরা। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট শিকার করেন সাউদি। তবে বল হাতে সাউদি রান দিয়েছেন ১০০। বাকি উইকেটটি পান ট্রেন্ট বোল্ট।
/আরআইএম
Leave a reply