শেরপুর জেলা ময়মনসিংহ বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ১৮২৯-২০১৫ পর্যন্ত এটি ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত ছিল। শেরপুর জেলা পূর্বে জামালপুর জেলার একটি মহকুমা ছিল। ১৯৮৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি এটিকে জেলার মর্যাদা দেয়া হয়। শেরপুরে মূলত ৩টি নির্বাচনী আসন রয়েছে।
শেরপুর-১ আসন
জেলার সদর এলাকা নিয়ে শেরপুর-১ আসন। ১৯৯৬ সাল থেকেই এ আসনের দলখে আওয়ামী লীগ। টানা পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আতিউর রহমান আতিক।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ৩ লাখ ৬১ হাজার ৫৩ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আতিউর রহমান আতিক নৌকা প্রতীকে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটকত বিএনপি’র ডা. সানসিলা জেবরিন পান ২৭ হাজার ৬৪৩ ভোট।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চান বর্তমান সংসদ সদস্য আতিউর রহমান আতিক। তিনি ছাড়া জেলার সাধারণ সম্পাদক মো. ছানুয়ার হোসেন ছানু ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির রুমান নৌকার মাঝি হতে আগ্রহী।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শিল্পপতি মো. হযরত আলী, তার মেয়ে জেলা বিএনপির সদস্য ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা ও জেলা যুবদলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
জাতীয় পার্টি থেকে চান জেলা সভাপতি ইলিয়াস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক মনি।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-১ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৮৬৩ জন ও নারী ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭ জন। হিজড়া ভোটার আছেন ৯ জন। এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৪৪টি আর ভোট কক্ষ ৯১৪টি।
শেরপুর–২ আসন
নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলা নিয়ে শেরপুর-২ আসন। এ আসন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেকটাই নির্ভার। ১৯৯১ সালের পর এ আসনে বিএনপি ক্ষমতায় আসে একবার। ২০০১ সালে মতিয়া চৌধুরীকে পরাজিত করেন বিএনপি জাহেদ আলী চৌধুরী। তবে এরপর আর কোনো নির্বাচনে হারেননি মতিয়া চৌধুরী।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ৩ লাখ ৪৯ হাজার ১৩৬ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মতিয়া চৌধুরী ৩ লাখ ৪৪২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটকত বিএনপি’র ফাহিম চৌধুরী পান ৭ হাজার ৬৫২ ভোট।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী প্রার্থী দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী। তবে মনোনয়ন পেতে প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও কৌশলে প্রচার চালাচ্ছেন নৌ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব আব্দুস সামাদ ফারুক ও নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে ফাহিম চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ইলিয়াস খান ও নালিতাবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র আনোয়ার হোসেন।
জাতীয় পার্টি থেকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রয়াত আব্দুস সালামের ছেলে শওকত সাঈদ এ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-২ আসনে মোট ভোটার ৪ লাখ ১২ হাজার ৮৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২ হাজার ৩৯ জন ও নারী ২ লাখ ১০ হাজার ৮১৮ জন। এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১৫৪টি আর ভোট কক্ষ ৯০৬টি।
শেরপুর–৩ আসন
শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা নিয়ে শেরপুর-৩ আসন। এটি জাতীয় সংসদের ১৪৫তম আসন। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও অষ্টম সংসদে বিএনপি এবং সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগ টানা বিজয়ী হয়।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫২০ জন। ভোট দেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৪৮০ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এ কে এম ফজলুল হক ২ লাখ ৫১ হাজার ৯৩৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মাহমুদুল হক রুবেল ধানের শীষ প্রতীকে পান ১২ হাজার ৪৯১ ভোট।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান সংসদ সদস্য এ কে এম ফজলুল হক, অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম, শ্রীবরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোতাহারুল ইসলাম লিটন ও শ্রীবরদী উপজেলা চেয়ারম্যান এ ডি এম শহিদুল ইসলাম এ আসনে নৌকার মাঝি হতে চান।
বিএনপি থেকে মনোনয়ন চান জেলা কমিটির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক রুবেল ও বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা কে এম আমিনুল হক।
শ্রীবরদী উপজেলা জামায়াতের আমীর নুরুজ্জামান বাদল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আব্দুস সাত্তার এ আসনে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৩ হাজার ১৪৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯০ হাজার ৩৮ জন ও নারী ১ লাখ ৯৩ হাজার ১০২ জন। হিজড়া ভোটার আছেন ৪ জন। এ আসনে ভোট কেন্দ্র ১২৬টি আর ভোট কক্ষ ৭৬৩টি।
এটিএম/
Leave a reply