বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের মতভেদ!

|

বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যুতে অভিন্ন অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। এমন মূল্যায়ন করে কূটনীতিকরা বলছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিকল্প যারা, তাদের ওপর আস্থা না থাকায়, সরকারের ধারাবাহিকতার পক্ষে দিল্লি। তবে সহমত না হলেও এনিয়ে ওয়াশিংটন-দিল্লি দ্বন্দ্বে জড়াবে না বলেই মনে করেন তারা। অবশ্য ভূ-রাজনৈতিক এই টানাপোড়েনে না ঢুকতে সরকারকে পরামর্শ দিচ্ছেন সাবেক কূটনীতিকরা।

গত মে মাসে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে বাংলাদেশের জন্য ভিসানীতি ঘোষণা করলেও, এই ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতা আরও আগে থেকে। সবশেষ দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠকেও যে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এসেছিল, তা স্পষ্ট। একমত না হলেও নিজেদের অবস্থান পরস্পরকে জানিয়েছে প্রভাবশালী দুই দেশ।

প্রশ্ন হলো, নির্বাচন নিয়ে এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অংশীদার ভারতের সাথে মনভিন্নতা কেনো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকার পরিবর্তন আর আওয়ামী লীগের বিকল্প শক্তির ওপর ভারতের অনাস্থা, এই দুই ইস্যুতেই মতবিরোধ বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন হয়েছে। তারা সন্ত্রাসবাদ থেকে সরে এসে এখন গণতন্ত্র ও দুর্নীতি বিরোধী ব্যবস্থার দিকে মনোযোগী হয়েছে।

অন্যদিকে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলছেন, আওয়ামী লীগের সাথে ভারতের সমঝোতা ভালো, অন্যদিকে দলটির বিকল্প শক্তির ওপর তাদের আস্থা নেই। তাই নয়াদিল্লি চাইতেই পারে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক। নির্বাচন সুষ্ঠু হলো কিনা তা নিয়ে ভারতের মাথাব্যথা নেই। তারা চায়, এই একই ব্যবস্থা চলমান থাকুক।

ভারতের অবস্থানের সাথে অনেকটা একমত চীনও। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজস্ব স্বার্থ আর কৌশলগত কারণে বড় দেশগুলোর এমন অবস্থান। এনিয়ে এখনি তারা সংঘাতে না গেলেও বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়েছেন।

সাবেক পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত চাইছে যুক্তরাষ্ট্র আগের মতোই বাংলাদেশের ব্যাপারে তার মাধ্যমেই সবকিছু করুক এবং বাংলাদেশের ব্যাপারে নয়া দিল্লি যা সিদ্ধান্ত নেয়, তা যেনো যুক্তরাষ্ট্র মেনে নেয়।

একই ইঙ্গিত দিয়ে সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ূন কবির বলছেন, বাংলাদেশের ব্যপারে ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্র একমত হয়নি। তবে একমত না হওয়া মানেই সংঘাত নয়। তবে পরিস্থিতি যাই হোক, বাংলাদেশ কোনোভাবেই যেন ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে না ঢোকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

জাতীয় স্বার্থে বিভেদ ভুলে রাজনৈতিক দলগুলো একমত না হতে পারলে ভবিষ্যতে সংকট বাড়বে বলেও আশঙ্কা কূটনীতিকদের।

এসজেড/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply