ইতিহাস গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারালো ভারত

|

ছবি: সংগৃহীত

পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেলো ভারত। আগে ব্যাট করতে নেমে জশ ইংলিসের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ২০৮ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইশান কিশানের হাফ সেঞ্চুরি ও সুরিয়া কুমার যাদবের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের পর শেষ ওভারের রোমাঞ্চে জয় তুলে নেয় ভারত। টি-টোয়েন্টিতে এটিই ভারতের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিশাখাপত্তনমে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ভারতীয় অধিনায়ক সুরিয়া কুমার যাদব। ব্যাট করতে নেমে শুরুটা নিজেদের মতো রাঙিয়ে তুলে অজি ব্যাটাররা। নিয়মিত ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার খেলছেন না এই সিরিজে। ওপেনিংয়ে নামেন স্টিভেন স্মিথ। তার সাথে ছিলেন ম্যাথু শর্ট।

শর্ট অবশ্য রবি বিষ্ণুইয়ের ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন দলীয় ৩১ রানে। আর সেখান থেকে তিনে নামা জশ ইংলিসকে সাথে নিয়ে স্মিথ পাড়ি দেন লম্বা পথ। দু’জন মিলে টি-টোয়েন্টিতে দলের হয়ে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে গড়েন সর্বোচ্চ জুটি।

দলের শতক পেরিয়ে যায় ১১.৩ ওভারেই। ইংলিসকে দেখা যায় প্রচণ্ড মারমুখী ব্যাটারের ভূমিকায়, সাথে স্মিথও কম যাচ্ছিলেন না। স্মিথকে অবশ্য থামতে হয়েছে ৫২ রানেই। তবে ইংলিস নিজেকে নিলেন অন্য চূড়ায়।

ছবি: সংগৃহীত

৪৭ বলে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান এই উইকেটকিপার ব্যাটার। ১১ চার ও ৮ ছয়ে সাজানো ইনিংস প্রসিদ কৃষ্ণার ডেলিভারিতে ১০৮ রানে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয়।এরপর মার্কাস স্টয়নিস ও টিম ডেভিড মিলে দলের রান দুইশো ছাড়িয়ে নেন। ৩ উইকেট হারিয়ে ২০৮ রানের সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া।

২০৯ রান তাড়ায় ইনিংসের প্রথম ওভারে উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। মার্কাস স্টয়নিসের শর্ট লেন্থের স্লোয়ার ডেলিভারিতে পুল করে ডিপ স্কয়ার লেগে পাঠিয়ে দুই রান নিতে চেয়েছিলেন যশস্বী জয়সাওয়াল। প্রথম রান অনায়াসে নিলেও দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে বাধে ঝামেলা। দ্বিতীয় রান নিতে গিয়ে জয়সাওয়াল কয়েক কদম এগিয়ে পিছু হটেন।

সাড়া দিয়ে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে আসা রুতুরাজ গায়কোয়াড় ফলে ফিরতে পারেননি সঠিক সময়ে। ফলে কোনো বল না খেলে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় রুতুরাজকে। ওপেনার জয়সাওয়াল ইনিংস বড় করতে পারেননি। ম্যাথু শর্টের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারিটা নিজের জায়গাতেই পেয়েছিলেন তরুণ এই ওপেনার। তবে ব্যাটে-বলে ঠিকঠাক করতে না পারায় মিড অফে স্টিভ স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় ২১ রান করা জয়সাওয়ালকে।

২২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন সুরিয়া কুমার ও ইশান। তারা দু’জনে মিলে যোগ করেন ১১২ রান। দারুণ এক হাফ সেঞ্চুরি করা ইশান ৩৯ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেললে ভাঙে তাদের এই জুটি। এদিকে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিলক ভার্মা। এরপর রিংকু সিংয়ের সঙ্গেও দারুণ এক জুটি গড়েন সুরিয়া। দলকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গিয়ে ফিরে যান ডানহাতি এই ব্যাটার। ২৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করা সুরিয়া কুমার আউট হন ৮০ রানের ইনিংস খেলে।

ছবি: সংগৃহীত

ম্যাচ জেতাটা তখন ভারতের জন্য সময়ের ব্যাপার ছিল। তবুও শেষ ওভারে রোমাঞ্চ ছড়িয়েছেন শন অ্যাবট। ভারতের জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৭ রান। অ্যাবটের প্রথম বলেই চার মারেন রিংকু। পরের বলে অতিরিক্ত খাত থেকে এক রান এলে স্ট্রাইক পান অক্ষর প্যাটেল। অ্যাবটের স্লোয়ার ডেলিভারিতে খেলতে গিয়ে তারই হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ২ রান করা এই বাঁহাতি ব্যাটার।

রিংকুকে স্ট্রাইক দিতে গিয়ে পরের বলে রান আউট হন রবি বিষ্ণই। তখনও ২ বলে ২ রান প্রয়োজন ভারতের। এমন সময় দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন আর্শদীপ সিং। শেষ বলটা অ্যাবট করেছিলেন হাফ ভলি এবং নো। সুযোগ পেয়ে ছক্কা মেরে ভারতের ২ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেন রিংকু। ওই ছক্কাটি যোগ না হওয়ায় ১৪ বলে ২২ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকতে হয় বাঁহাতি এই ব্যাটারকে।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দু’টি উইকেট শিকার করেন স্পিনার তানভীর সাংঘা। একটি করে উইকেট নেন জ্যাসন বেহেনড্রফ, শন অ্যাবোট ও ম্যাথু শট।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply