চারদিনের যুদ্ধবিরতিতে শরণার্থী শিবির থেকে নিজ বাড়িতে ফিরছেন অবরুদ্ধ গাজার বাসিন্দারা। অল্প সময়ের জন্য হলেও নিজ বাড়িতে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে চান তারা। তবে, এই মানুষগুলোর জানা নেই তাদের ভিটে-মাটি আদৌও টিকে আছে কিনা। অন্যদিকে, উপত্যকার উত্তর দিকের বাসিন্দাদের বাড়ি ফিরতে একেবারেই নিষেধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। দীর্ঘদিন বাড়ির বাইরে থাকা এ মানুষগুলো যারপরনাই নাখোশ এমন সিদ্ধান্তে। খবর আল জাজিরার।
দীর্ঘ ৪৮ দিনের ভয়ংকর আগ্রাসনের পর শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) গাজায় কার্যকর হয় ৪ দিনের যুদ্ধবিরতি। এতে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া লাখ লাখ মানুষের মনে। তাই সাহস আর তল্পিতল্পা গুছিয়ে বাড়ির পথ ধরেছেন নিরীহ মানুষগুলো। তবে হামলায় বাসস্থানগুলো টিকে আছে কিনা তা জানা নেই তাদের।
এদিকে জ্বালানির অভাবে গাজায় কোনো যানবাহন চলছে না। তাই কয়েক কিলোমিটার রাস্তা হেঁটেই পাড়ি দিচ্ছেন এসব সাধারণ মানুষ। তবু মুখে লেগে আছে বিস্তৃত হাসি, চোখ জ্বলজ্বল করছে আনন্দে।
এমনইভাবে অনিশ্চয়তা বুকে নিয়ে বাড়ির পথ ধরা এক ফিলিস্তিনি বলেন, ভীষণ স্বস্তিবোধ করছি। বাড়িতে ফিরে যাচ্ছি। দীর্ঘ অত্যাচারের পর মনটা একটু বিশ্রাম পেয়েছে আমার। চারদিন পর যদিও আবার ফিরতে আসতে হবে। কিন্তু মন মানছে না। তাবুর অস্বস্তিকর নোংরা পরিবেশে আর ভালো লাগছে না। বাড়িতে গিয়ে এই চারদিন একটু স্বাভাবিক জীবনযাপন করবো।
তবে উত্তর গাজার মানুষদের বাড়ি ফিরতে নিষেধ করে দিয়েছে ইসরায়েল। চির পরিচিত নিজ ভিটে-মাটি আর স্বজনদের দেখতে আকুল হয়ে ছিলেন এই মানুষগুলো। ইসরায়েলের এমন নিষেধাজ্ঞায় মানসিকভাবে আরেকদফা ভেঙে পড়েছেন তারা।
ভুক্তভোগী এসব মানুষ বলছেন, সবাই যার যার বাড়ি ফিরছে। আমরা ফিরতে পারছি না। এটা ঠিক নয়। যুদ্ধ বিরতির শর্তে এটাও নিশ্চিত করা উচিত ছিল যে, সবাই যেন সবাই নিজের বাড়িতে ফিরতে পারে। এক ঘণ্টার জন্য হলেও নিজের বাড়িটা দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে। কিন্তু উপায় নেই।
বাড়ি ফেরা হোক বা না হোক, প্রাণ ভয় ছাড়াই অন্তত ৪ দিন শান্তিতে নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পেলো অসহায় গাজাবাসী। তবে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হবার সুযোগ নেই তাদের। বিরতির পর ভয়াবহ তাণ্ডব চালানোর ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছে নেতানিয়াহু।
এসজেড/
Leave a reply