উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরিতে ২৬৬ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করলো নিউজিল্যান্ড

|

দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলেই অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে ৩১০ রানেই আটকে যায় বাংলাদেশের রানের চাকা। শুরুর দিকেই ধাক্কা খাওয়া কিউইদের একপ্রান্ত আগলে, অভিজ্ঞ কিউই ব্যাটার কেন উইলিয়ামসন তুলে নেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরি। তার ১০৪ রানে ভর করে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রানে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে নিউজিল্যান্ড।

দ্বিতীয় দিনের শুরুতে বুধবার (২৯ নভেম্বর) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দলীয় ৯ উইকেটে ৩১০ রানে ব্যাট হাতে মাঠে নামে দুই অপরাজিত ব্যাটার তাইজুল ইসলাম এবং শরিফুল ইসলাম। তবে দিনের প্রথম বলেই শরিফুল ইসলাম লেগ বিফোর হন। ফলে ৩১০ রানেই আটকে যায় বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।

এরপর ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করে কিউইরা। তবে নিজের প্রথম ওভারে এসেই আঘাত হানেন বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ২১ রানে আউট হয়ে যান টম লাথাম। ফলে ১৩ ওভারে ৩৬ রানে পড়ে কিউইদের প্রথম উইকেট। ১৬তম ওভারে দলীয় ৪৪ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। ডেভন কনওয়েকে ১২ রানে আউট করেন মেহেদি মিরাজ। তবে পরিস্থিতি সামলে নেন কেন উইলিয়ামসন।

দ্রুত ২ উইকেট হারানোর পর সাবধানী ব্যাটিং করতে থাকেন উইলিয়ামসন। পরিস্থিতি অনুযায়ী কীভাবে ব্যাটিং করতে হয় সেটা ভালোই জানা তার। ৭৫ বলে তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ৩৪তম ফিফটি। চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে আসা হেনরি নিকোলসকে ১৯ রানে ফেরায় শরিফুল। তবে ফেরার আগে উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি গড়েন তিনি।

তবে উইলিয়ামসনের দুই অঙ্ক থেকে তিন অঙ্কে পৌঁছানোর যাত্রায় অবদান রয়েছে বাংলাদেশি ফিল্ডারদেরও! ৪৯তম ওভারের শেষ বলে নাঈম হাসানের ফুল লেংথ ডেলিভারি সুইপের চেষ্টা করেন উইলিয়ামসন। টাইমিংয়ে গড়বড় হওয়ায় ক্যাচ উঠে যায় মিড উইকেটে। সহজতম সুযোগটি হাতে জমাতে পারেননি তাইজুল। একই ওভারের প্রথম বলেও এলবিডাব্লিউ’র আবেদন থেকে রক্ষা পান উইলিয়ামসন। তৃতীয় বলে লেগ গালিতে ক্যাচ দিয়েও কিছুটা দূরে পড়ায় বেঁচে যান উইলিয়ামসন। নাঈম হাসানের বলে দুইবার উইলিয়ামসনের ক্যাচ ফেলেছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ৭০ রানে আবারও জীবন পান কেন। এবার ক্যাচ ফেলেন শরিফুল ইসলাম।

জীবন পেয়ে ৭৬তম ওভারের চতুর্থ বলে নাঈমের ডেলিভারি স্কয়ার লেগে ঠেলে পৌঁছে যান তিন অঙ্কে। তুলে নেন টেস্টের ২৯তম সেঞ্চুরি। ১৮৯ বলে করা এই সেঞ্চুরির মাধ্যমে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ড ব্যাটারদের মধ্যে টেস্টে সর্বোচ্চ ৪ সেঞ্চুরির রেকর্ড এখন উইলিয়ামসনের। এই তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা টম লাথাম করেছেন ৩ সেঞ্চুরি। এছাড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে কিউই ব্যাটার হিসেবে টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও এখন উইলিয়ামসন।

আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দিনের প্রথম বলেই শেষ বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস

পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ক্রিজে আসা ড্যারেল মিচেল দ্রুত রান তুলছিলেন। তবে ৫৪ বল খেলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪১ রান করা মিচেলকে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে ফেরান তাইজুল। এরপরে নাঈমের বলে ৬ রান করে ক্যাচ আউট হন টম ব্লান্ডেল।

সাদা বলের ক্রিকেটে নিয়মিত ফিলিপস ক্রিজে এসেই টেস্ট সহজাত ব্যাটিং করতে থাকেন। উইকেটে থিতু হয়ে যাওয়া ফিলিপসকে কোনোভাবেই ফেরাতে পারছিলেন না টাইগার বোলাররা। খানিকটা বাধ্য হয়েই ফিলিপসকে থামাতে মুমিনুল হককে বোলিংয়ে আনেন নাজমুল। অধিনায়কের সেই জুয়া কাজেও লাগে। মমিনুলের করা ইনিংসের ৭৫তম ওভারের শেষ বলে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ভুল করেননি অধিনায়ক, লুফে নেন ৬২ বলে ৪২ রান করা ফিলিপসের গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচটি।

৮০তম ওভারে নতুন বল পায় বাংলাদেশ। ৮১তম ওভারে তাইজুলের হাতে নতুন বল তুলে দেন অধিনায়ক। তিনিও দিয়েছেন অধিনায়কের ভরসার প্রতিদান। ওভারের পঞ্চম ডেলিভারির আর্ম বলে সামনে এসে খেলার চেষ্টা করেও বল খুঁজে পাননি উইলিয়ামসন। ব্যাট-প্যাডের মাঝে জায়গা খুঁজে নিয়ে উইকেটে গিয়ে আঘাত হানে তাইজুলের ডেলিভারি। বোল্ড হয়ে ফেরেন উইলিয়ামসন। এর দুই ওভার পরেই ইশ সোধিকে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরত পাঠান তাইজুল। এরপরের ওভার শেষে দ্বিতীয় দিনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়ার। ফলে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৬৬ রানে শেষ হলো বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিন।

আট উইকেটের মধ্যে তাইজুল একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট। একটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল, মিরাজ, নাঈম ও মোমিনুল হক।

/এমএইচ

 


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply