ঋণপত্র বা এলসি খোলার ক্ষেত্রে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সতর্কবার্তায় তৈরি হয়েছে ধুম্রজাল। নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা নিয়ে হঠাৎ করে নতুন শর্ত কেন, এই বিষয়ে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের কাছে জানতে চাইবে বিজিএমইএ। শ্রমমান এবং অধিকারের বিষয় সামনে এনে রফতানির ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তারপর থেকেই দেশটির বাজারে পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। বিশ্লেষকরা বলছেন, নিজেদের স্বার্থেই শ্রমমান উন্নয়ন করতে হবে।
বাংলাদেশের একক বৃহত্তম পোশাক রফতানির গন্তব্য দেশ যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি চীন ও ভিয়েতনামের পর যুক্তরাষ্ট্রে তৃতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারক দেশ বাংলাদেশ। হঠাৎ করে শ্রম ইস্যুতে নতুন নীতিমালা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সেই নীতিমালার প্রেক্ষিতে সরকারকে সতর্ক করেছে ওয়াশিংটনে অবস্থিত বাংলাদেশের দূতাবাস।
এমন আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেয়ার ক্ষেত্রে নতুন শর্ত যুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান। এলসি খোলার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে ‘আমরা জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্য কর্তৃক কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপিত দেশ, অঞ্চল, বা দলের সাথে লেনদেন প্রক্রিয়া করবো না।’ এক্ষেত্রে কোনো কারণ দর্শাতেই রাজি নয় ওই প্রতিষ্ঠান। এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে উদ্যোক্তাদের করণীয় কী?
জানতে চাইলে বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, কেউ যদি এ ধরনের ক্লজ দেয়, তাহলে সেই ক্রেতার সাথে আমরা কাজ করবো কিনা, সেটাও ভাবনার বিষয়। বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রি হেলাফেলা করা কিংবা ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার মতো ইন্ডাস্ট্রি না।
ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের এমন সিদ্ধান্তে বিবৃতি দিয়েছে তৈরি পোশাক মালিকদের শীর্ষ সংগঠন, বিজিএমইএ। এতে বলা হয়, এমন বার্তায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা ছড়িয়ে পড়ছে। যা শিল্পের জন্য ক্ষতিকর।
এদিকে তৈরি পোশাক উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম শোনালেন আশার বানী। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন করবে বলে আমি মনে করি না। তারা ডিউটি আরোপ করতে পারে, বা অন্য কিছু করতে পারে। কিন্তু দেশ হিসেবে রাখবে না, তাহলে তো তারাও একপেশি হয়ে যাবে।
শ্রম অধিকার নিয়ে অর্থনীতি বিশ্লেষক প্রফেসর আবু ইউসুফ বলেন, শ্রম অধিদফতর যে ধরনের পরিদর্শন করে অনেক ক্ষেত্রেই তার প্রয়োগ সঠিকভাবে নিশ্চিত হয় না। আমেরিকা কী দেবে না দেবে তার চেয়েও বড়, নিজদের স্বার্থেই কমপ্লায়েন্সের বিষয়টা দরকার।
এটিএম/
Leave a reply