চামড়ায় পড়েছে ভাঁজ, শরীর নুইয়ে পড়েছে বয়সের ভারে। কিন্তু বয়সকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ভর্তি হয়েছেন স্কুলে। শিক্ষার কাছে বয়স কোনো বাধা নয়, এই প্রবাদের বাস্তব উদাহরণ যেন ভারতের সালিমা খান। ৯২ বছর বয়সী এই নারী ভর্তি হয়েছেন উত্তর প্রদেশের একটি প্রাথমিক স্কুলে।
যে সময়ে বিশ্রাম করার কথা সেই বয়সে যেন নিজেকে নতুন করে খুঁজে ফিরছেন সালিমা খান। পড়াশোনা করছেন প্রাথমিক বিভাগে। ক্লাস করছেন শিশুদের সাথে। সালিমা খানের আগ্রহ দেখে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরাও।
সালিমা খান উত্তর প্রদেশের বুলান্দ শহরের প্রত্যন্ত এক গ্রামের বাসিন্দা। ১৯৩১ সালে এই নারীর জন্ম। ছোটবেলায় লেখাপড়ার সুযোগ পাননি। তবে আগ্রহ ছিল ভীষণ। তাই শেষ বয়সে এসে স্কুলে ভর্তি হয়েছেন।
সালিমা খান বলেন, পড়তে ভীষণ ভালো লাগে আমার। তাই প্রতিদিন স্কুলে আসি। শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রতিদিন অনেক কিছু শিখছি। তারা যা যা বলেন সব মেনে চলি। এখন গণনা করতে পারি। স্কুলে সবার সাথে কথা বলতে আমার খুব ভালো লাগে।
সালিমা খানকে তার শিক্ষকরাও দাদিমা বলে ডাকেন। পড়াশোনার প্রতি এমন আগ্রহকে সাধুবাদ জানিয়ে তারা বলেন, বয়স যে কেবল একটি সংখ্যা তা প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি।
স্কুলের শিক্ষিকা ড. প্রতিভা শর্মা তার বিষয়ে বলেন, দাদিমা ভীষণ মনোযোগী ছাত্রী। তিনি একদিনও স্কুল ফাঁকি দেন না। একাই আসেন স্কুলে। ক্লাসের বাকি ছাত্র-ছাত্রীরা তাকে দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছে। পড়াশেনায় মনোযোগী হচ্ছে। আমার নিজের ছেলে মেয়েরাও যখন স্কুলে যেতে চায় না, তখন আমি ওদেরকে দাদিমার উদাহরণ দেই।
প্রাপ্ত বয়স্কদের সহজে শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে সম্প্রতি নব্য ভারত লিটারেসি মিশন প্রকল্প শুরু করেছে মোদি প্রশাসন। এরই অধীনে ভারতজুড়ে সালিমা খানের মতো অনেক বয়স্কের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে শিক্ষার আলো।
/এমএইচ
Leave a reply