‘সাংবাদিক না হলে এতক্ষণে জেলে থাকতে হতো’

|

ছবিটি ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদের ফেসবুক পেজ থেকে নেয়া।

কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে দারুস সালাম থানার এক এসআইয়ের বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেছেন জীবন আহমেদ নামে এক ফটো সাংবাদিক।

জীবন আহমেদের ফেসবুকে পোস্ট সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকালে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে পঞ্চগড়ের বাসের টিকিট কাটতে গিয়েছিলেন তিনি। টিকিট না পেয়ে বাস কাউন্টারের সামনে দাঁড়াতেই একজন পুলিশ তাকে ‘তুই তোকারি’ সম্বোধন করা শুরু করেন। জীবন আহমেদ কারণ জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে যান ওই এসআই। একপর্যায়ে তার কোমরের বেল্ট ধরে দাগী আসামির মতো টানতে থাকেন। তার অপরাধ কী, সেটা বারবার জানতে চাইলে ওই এসআই বলেন, ‘তোকে সন্দেহ হয়েছে, তাই থানায় নিয়ে যাবো’।

এরপর আরও বাজে আচরণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন এই ফটো সাংবাদিক। তিনি বলেন, তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটাও ছিনিয়ে নেয়া হয়। এরপর ধস্তাধস্তি করে পুলিশের গাড়ির কাছে নিয়ে তার ব্যাগ চেক করে পুলিশ। একপর্যায়ে গণমাধ্যমের আইডি কার্ড দেখে তাকে জড়িয়ে ধরে এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘ভাই, আগে বলবেন না, আপনি সাংবাদিক!’

জীবন আহমেদের ফেসবুক পোস্ট

এরপর জীবন ওই পুলিশ সদস্যকে বলেন, পেশাগত পরিচয়ের আগে তিনি একজন মানুষ, এই দেশের একজন সাধারণ নাগরিক। তিনি জানতে চান, বাংলাদেশের কোন্‌ আইনে আছে, ওয়ারেন্ট ছাড়া এভাবে টানতে টানতে থানায় নিয়ে যাওয়া, তল্লাশির নামে এভাবে হয়রানি করা?

‘সাংবাদিক না হলে এতক্ষণে জেলে থাকতে হতো’ মন্তব্য করে জীবন তার স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমি পেশায় একজন সাংবাদিক বলে এরা আমাকে নিয়ে আর ঘাঁটলো না। কিন্তু আমার জায়গায় কোনো সাধারণ মানুষ হলে হয়তো এতক্ষণে অস্ত্র কিংবা মাদক মামলা ঠুকে জেলে চালান করে দেয়ার ব্যবস্থা করে ফেলতো।

দারুস সালাম থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে। সেখানে কেউ যদি কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করে, তাহলে অবশ্যই তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে। এরকম ঘটনা দুঃখজনক জানিয়ে ওসি বলেন, যার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ, তার সাথে কথা হয়েছে। আজ বিকেল ৩টায় আসতে বলা হয়েছে তাকে। সকল ঘটনা শুনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত মানুষের নিরাপত্তার জন্যে, সমাজে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। কিন্তু এদের নিয়ে সাধারন মানুষের আতঙ্কের শেষ নেই। সাধারণ একজন নাগরিকের নাগরিক অধিকার নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য কি তাকে পুলিশ বা সাংবাদিক হতে হবে? সাধারণ একটা জীবনের কি কোনো দাম নাই?

এমএইচ/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply