বিদেশগামী কর্মীদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি: বিশ্লেষকদের মত

|

আলমগীর হোসেন:

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রায় দেড় কোটি বাংলাদেশি। দেশের উন্নয়নে বড় ধরনের অবদান রয়েছে এসব প্রবাসীদের। তাদের হাত ধরেই শক্তিশালী ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েছে দেশের অর্থনীতি। বৈদেশিক মুদ্রার মজুদেও প্রবাসীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।

এদিকে, করোনা মহামারির পর থেকেই বাড়ছে কর্মী যাওয়ার পরিমাণ। চলতি বছরের ১১ মাসে বিদেশি কর্মসংস্থান হয়েছে ১২ লাখের বেশি। তাদের শ্রমে দেশে বছরে রেমিট্যান্স আসছে গড়ে দুই হাজার কোটি ডলারের বেশি। অর্থনীতিতে এতো অবদান রাখার পরও তাদের অধিকার কতটা সুরক্ষিত হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে বিশ্লেষকদের। এছাড়া, বাড়তি অভিবাসন ব্যয়েও কর্মীদের নেই কাজের নিশ্চয়তা।

অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, রিক্রুমেন্ট প্রক্রিয়ায় যে স্বচ্ছতা থাকার কথা, তা আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। এই কারণে দেখা যাচ্ছে, অভিবাসনের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। কি পরিমাণ শ্রমিক চাকরি ও ওয়ার্ক পারমিট পেয়েছে এবং কতজনকে ফেরত আসতে হয়েছে— এর পরিসংখ্যানটা আমাদের নেই। এই কারণে সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।

শ্রম অভিবাসন বিশ্লেষক হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমরা এখনও প্রবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে পারিনি। একই কাজ করে ভারতের কর্মীদের বেতন বাংলাদেশিদের তুলনায় বেশি। যারা আমাদের কর্মী নেয়, তাদের সাথে আমরা কেন এখনও সরকারিভাবে চুক্তি করতে পারি না, আমাদের সর্বনিম্ন বেতন কত হবে। যারা বেশি দক্ষ ও প্রফেশনালদের বেতন কত হবে, তা নির্ধারণ করতে পারছি না।

বিদেশগামী কর্মীদের হয়রানি কমাতে মধ্যস্বত্বভোগীদের আইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। প্রশ্ন আছে, দূতাবাস কর্মীদের ভূমিক নিয়েও। অভিবাসন কূটনীতির উন্নয়ন ছাড়া কর্মীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং প্রবাসী আয় বৃদ্ধি কোনোটাই সম্ভব নয় বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা।

শাকিরুল ইসলাম বলেন, আমরা যে এমওই করি, তাতে কি চুক্তি হয়েছে তা আমি নিজেও জানি না; অথচ আমি এই খাতে কাজ করছি ২০ বছর ধরে। এগুলো গোপন দলিল হিসেবে রাখা হয়। আমি মনে করি, এ ধরনের দলিলগুলো সবার সাথে আলোচনা করে উন্মুক্ত করা উচিত। যাতে শ্রমিকের স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারি।

হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আমাদের মাইগ্রেশন ডিপ্লোমেসি এখনও দুর্বল। কর্মীদের সুরক্ষায় আমাদের দূতাবাসগুলোকে আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে হবে। বিদেশগামী কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

তারা আরও বলেন, প্রবাসী কর্মীদের অধিকার রক্ষায় সংখ্যার চেয়ে কর্মী প্রেরণে গুণগত মানের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। একই সাথে দক্ষ কর্মী বিদেশ পাঠানোর ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply