বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ‘ক্রলিং ব্র্যান্ড’: এক্সচেঞ্জ রেট পরিবর্তনের সীমা বেঁধে দেয়া যায়

|

তৌহিদ হোসেন:

বাংলাদেশ ব্যাংককে এক্সচেঞ্জ রেট নির্ধারণের নতুন কৌশল দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। এর সুবাদে বিদেশি মুদ্রা পুরোপুরি বাজার দরে বিনিময় হবে না। বরং একটি মধ্যবর্তী দর ঘোষণা করে সর্বোচ্চ কত শতাংশ ওঠানামা করবে— থাকবে সেই করিডোর।

বাংলাদেশকে নিয়ে শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) দেয়া প্রতিবেদনে এই ‘ক্রলিং ব্যান্ড’ কৌশলের ধারণা দিয়েছে আইএমএফ। মূলত, বাংলাদেশে ডলারের দর ঘোষণা করে ব্যাংকারদের দুই সংগঠন বাফেদা ও এবিবি। এতে মধ্যস্থতা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কিন্তু ঘোষণার সাথে বাজারের মিল থাকে খুব কম। যেমন, সর্বশেষ প্রতি ডলারে ১ টাকা কমিয়ে রফতানি ও রেমিট্যান্সে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা এবং আমদানিতে ১১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। অথচ অনেক ব্যাংক বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ডলার কিনছে ১২০ টাকার বেশি দামে। অর্থাৎ ঘোষিত দর অকার্যকর।

তাইতো ঋণ নিয়ে আলোচনার শুরু থেকেই ডলারের বিনিময় হার নমনীয় করার পরামর্শ দিচ্ছে আইএমএফ। তবে, মূল্যস্ফীতির ওপর নতুন চাপের ভয়ে ধীরে চলো নীতিতে হাঁটছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইএমএফের দেয়া এই পদ্ধতির সুফল পেয়েছে, চিলি, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড ও ইসরায়েল। বৈদেশিক লেনদেনে বাংলাদেশের অবস্থান ভালো করবে, এমনটা বলছে সংস্থাটি।

আইএমএফ এর বাংলাদেশ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ বলেন, ‘ক্রলিং ব্যান্ড’ এমন একটি প্রক্রিয়া, যা মুদ্রা বাজারকে হুট করে অস্থির করবে না। মনে রাখতে হবে, কঠোর মুদ্রানীতির সাথে ডলারের স্বাভাবিক লেনদেনও ধরে রাখতে হবে। তাই আমরা মনে করি, বিশ্ববাজারে পুরোপুরি নির্ভর হওয়ার আগে মাঝে একটা করিডোর থাকা উচিত। সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে আইএমএফ।

ধারণা করা হয়, বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে মূল্যস্ফীতি লাফিয়ে বাড়বে। এর ফলে, বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়বে। ঝুঁকিতে পড়বে বেসরকারি খাত। তাই অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যেকোনো সিদ্ধান্তের আগে মুদ্রানীতি, রাজস্ব নীতি ও আর্থিক নীতির মাঝে সামঞ্জস্য জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এম আবু ইউসুফ বলেন, আইএমএফ যখন একটা ডিই ডিলিজেন্স করে, বাংলাদেশ ঠিক পথে আছে, তখন অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদাররা ইতিবাচক একটা ইঙ্গিত পায়। বাংলাদেশে যে কাজগুলো হচ্ছে, তা সঠিক পথেই আছে। এটা কেবল টাকার অঙ্কের একটা বিষয় না, সম্মানেরও।

উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত আইএমএফের ঋণের দুই কিস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ। ৩য় কিস্তি মিলতে পারে ২০২৪ সালের মার্চে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply