সিনিয়র করেসপনডেন্ট, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জে বিএনপির নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাকের লিফলেট নেয়ায় এক পোশাক ব্যবসায়ীকে আটক করার অভিযোগ ওঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে ব্যবসায়ীরা প্রায় ঘণ্টখানেক দোকানপাট বন্ধ রাখেন। পরে ওই ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
শনিবার(২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরে এই ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপি ও স্থানীয় ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করার আহ্বানে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিএনপি। বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির এই ডাক দেন জ্যেষ্ঠ যুগ্ন মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার(২১ ডিসেম্বর)থেকে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৭ জানুয়ারি ‘ডামি’ নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলনে বিভিন্ন লেখাসম্বলিত লিফলেট বিতরণ করে আসছেন জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
এর ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের অদূরে শহীদ রফিক সড়কের পাশে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এই লিফলেট বিতরণ করেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডলি প্লাজা নামের একটি বিপণি বিতানের তৈরি পোশাক ব্যবসায়ী মশিউর রহমান ওরফে সুমনকে লিফলেট দেন নেতা-কর্মীরা। লিফলেট বিতরণের সেই ভিডিও চিত্র ফেসবুকে পোস্ট করেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা।
বিষয়টি জেলা পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসে। এর পর বেলা সোয়া একটার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেনসহ ছয়-সাত পুলিশ সদস্য ডলি প্লাজা বিপণিবিতানে গিয়ে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ব্যবসায়ী মশিউর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বেলা দেড়টার দিকে দোকান বন্ধ করেন তৈরিপোশাক-ব্যবসায়ীরা। এর পর তারা সদর থানায় যান। পরে বেলা আড়াইটার দিকে পুলিশ তাকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি মানিকগঞ্জ তৈরিপোশাক দোকান মালিক সমিতির সভাপতি খোন্দকার মিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চাপে আছি। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবো না।’
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক পোশাকব্যবসায়ী বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের দেওয়া লিফলেট নেওয়া এবং নেতা-কর্মীরা তা ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ব্যবসায়ী মশিউর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
ভুক্তভোগী পোশাকব্যবসায়ী মশিউর রহমান জানান, আকস্মিকভাবে বিএনপির কয়েকজন কর্মী এসে ব্যবসায়ীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন। আমাকেও একটি লিফলেট দেওয়ার সময় মোবাইলে তা ভিডিও করেন। পরে পুলিশ এসে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ আমাকে ছেড়ে দেন।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন জানান, একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ব্যবসায়ীকে থানা নেওয়া হয়েছিল। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীদের লিফলেট নেওয়া তাকে আটক করা হয়েছিল কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি হাবিল হোসনে বলেন, না লিফলেটের বিষয়ে নয়, অন্য একটি বিষয়ে তাকে থানায় নেওয়া হয়েছিল।
এটিএম/
Leave a reply