ডিবি পুলিশ পরিচয়ে টঙ্গীর এক ব্যবসায়ীর ২০০ ভরি স্বর্ণ লুটের অভিযোগ উঠেছে ৩ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। রাজধানীর উত্তরার এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় অংশ নেয় আরও ৯-১০ জন। এদের মধ্যে দুজন এসআই এবং একজন এএসআই ছিলেন। ডাকাতির সাথে জড়িত পুলিশের এক সোর্সও। ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, তারই এক আত্মীয়ের পরিকল্পনায় লুটপাটে অংশ নেয় পুলিশ। পরে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলার পর এক এএসআইসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
ভুক্তভোগী স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, গত ১৪ ডিসেম্বর ভোর ৬টা ২২ মিনিটে অনিক নামে তার দোকানের এক কর্মচারী ওই ব্যবসায়ীর নির্দেশে ২০০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে তাতিঁবাজারের উদ্দেশে যাচ্ছিল। এ সময় উত্তরার ১৩ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর সড়কে পৌঁছালে অনিকের পিছু নেয় একটি সাদা মাইক্রোবাস। কিছুক্ষণের মধ্যে অনিককে জোর করে ওই মাইক্রোবাসে ওঠানো নয়। এরপর ডিবি পুলিশ পরিচয়ে মারধর করে তার কাছ থেকে দুশো ভরির বেশি স্বর্ণ লুটে নেয় অভিযুক্তরা।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী গৌরাঙ্গ দত্ত জানান, ২২ ক্যারেট স্বর্ণ গলিয়ে গয়না বানানোর জন্য আমি আমার ওই কর্মচারীতে ওইদিন তাঁতিবাজার যেতে বলেছিলাম। তবে উত্তরার ওই এলাকায় একটা মোড় ঘোরার পরই একটা সাদা মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন নেমে ওকে জোর করে মাইক্রোবাসে ঢোকায়। এরপর নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার কাছে থাকা স্বর্ণ লুটে নেয়। এ সময় তাকে মারধরও করা হয়।
ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তার ভগ্নিপতি মানিক দাশই শত্রুতা করে এ ডাকাতির পরিকল্পনা করেছে। এখন জীবন নিয়ে শংকায় শিল্পী জুয়েলার্সের মালিক গৌরাঙ্গ। তিনি বলেন, প্রথমে আমরা বুঝতে পারছিলাম না এ ঘটনা কে ঘটিয়েছে। শুরুর দিকে কর্মচারী অনিককেই সন্দেহ করি। তবে থানায় অভিযোগের পর তদন্তে যখন বেরিয়ে এলো, পুলিশ কর্মকর্তারাই ডাকাতিতে জড়িত, তখন থেকেই ব্যাপকভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ঘটনায় ২৩ ডিসেম্বর উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করেন গৌরাঙ্গ দত্ত। তদন্তের এক পর্যায়ে ২৪ ডিসেম্বর গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই জানা যায়, তিনি শ্রীপুর থানার এএসআই। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এএসআই গিয়াসের বাড়ি থেকে ৩১ লাখ টাকা উদ্ধারও করে পুলিশ।
এ ঘটনায় আরও ২ এসআই এর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে আমির নামে একজন পুলিশের সোর্সও আছে। তার মাধ্যমে পুলিশের কর্মকর্তারা ডাকাতি করে বেড়াতো।
উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, আমাদের কাছে মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা মামলার তদন্ত করছি। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ৪ জন ইতোমধ্যেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ টাকা উদ্ধার হয়েছে।
স্বর্ণ লুটের মামলায় গ্রেফতারের পর এএসআই গিয়াস উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাকি ২ এসআইকে গ্রেফতারের পর তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও ফৌজদারি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়েছে পুলিশ।
এসজেড/
Leave a reply