মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। রাত পেরিয়ে শীতের সকালে শুরু হবে চব্বিশের ভোটগ্রহণ। ব্যালট পেপারের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণের সকল প্রস্তুতি শেষ করেছে।
রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় শুরু হয়ে ভোট চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। দেশের ৪২ হাজার ২৫টি ভোটকেন্দ্রে একযোগে শুরু হবে এবারের ভোটগ্রহণ। এর আগে, ভোরেই কেন্দ্রে যাবে ব্যালট পেপার।
নির্বাচনে ২৯৯টি আসনে মোট ১ হাজার ৯৭০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এতে অংশ নিচ্ছে মোট ২৮টি রাজনৈতিক দল।
নওগাঁ-২ আসনে এক প্রার্থীর মৃত্যুতে সেখানে ভোট স্থগিত করা হয়েছে। নির্বাচনের পর ওই আসনে ভোটের জন্য পুনরায় তফসিল ঘোষণা করা হবে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৪ জন। যার মধ্যে পুরুষ ৬ কোটি ৫ লাখ ৯২ হাজার ৩১১ জন, নারী ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৮৪৮ জন।
দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অংশগ্রহণ করেনি। সেইসঙ্গে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে দেশবাসীকে। ভোটের দিনসহ ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে তারা।
দলটি সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, দলের সকল রাজনৈতিক নেতার মুক্তি দাবি এবং ভোট বর্জনে আহ্বান জানিয়ে এখন নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। বিএনপি ছাড়াও সমমনা কয়েকটি দলও এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না।
এদিকে, ভোটের উৎসবেও দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ভোটকেন্দ্রে হামলা-আগুন থেকে শুরু করে নানা সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং ভোট উপলক্ষ্যে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ সদস্য।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে রাজধানী থেকে মাঠ পর্যায় পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাত লাখ ৮২ হাজার ৮৬৩ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এরমধ্যে পুলিশ সদস্য এক লাখ ৭৪ হাজার ৭৬৭ জন, আনসার পাঁচ লাখ ১৪ হাজার ২৮৮ জন, র্যাব পাঁচ হাজার ৫৬০ জন, বিজিবি ৪৪ হাজার ৯১২ জন, কোস্ট গার্ডের সদস্য দুই হাজার ৩৫৫ জন, সেনাবাহিনী সদস্য ৩৮ হাজার ১৫৪ জন, নৌবাহিনী সদস্য দুই হাজার ৮২৭ জন।
রাজধানীসহ সারাদেশে ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল শুরু করেছেন। সঙ্গে আছে বিজিবি, আনসার, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও নৌ সদস্যরা। তারা স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করে। পরে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে মনোনয়নপত্র যাচাইবাছাই। এছাড়া মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল ও নিষ্পত্তি চলে ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ১৭ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয় ১৮ ডিসেম্বর। এরপর শুরু হয় নির্বাচনী প্রচারণা, যা চলে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।
/আরএইচ
Leave a reply