রংপুরে নৌকা প্রার্থীর স্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্র দখলের চেষ্টার অভিযোগ, গুলিবিদ্ধ ৩

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর

রংপুরের বদরগঞ্জে একটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৬ জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ‍পুলিশ জানিয়েছে, একটি পক্ষ প্রিজাইটিং অফিসারকে তুলে নিয়ে কেন্দ্র দখল করে সিল মারার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ছোড়ে তারা। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, নৌকার প্রার্থীর লোকজন কেন্দ্র দখল করে সিল মারার সময় পুলিশ বাইরে সাধারণ জনতার ওপর গুলি বর্ষণ করে তাদের সিল মারার সুযোগ করে দেয়। এছাড়া বিভিন্ন কেন্দ্রে জালভোট এবং বেশ কয়েকজনের আটক হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভোটার উপস্থিতি ছিল ৩৪ দশমিক ৫ ভাগ।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোট গণনার ঠিক ২০ মিনিট আগের ঘটনা। রংপুর-২ আসনের বদরগঞ্জের সাহেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেস নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর স্ত্রী, শ্যালিকাসহ কয়েক যুবক। এরই মধ্যে আরও কিছু নৌকার সমর্থক সেখানে প্রবেশ করে সিল মারার চেষ্টা করে। এ নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হলে বাইরে থাকা আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখনই অতিরিক্ত ফোর্স এসে লাঠিপেটা ও গুলি চালায়।

এতে স্থানীয় ফেরিওয়ালা আব্দুর রহিম, ছাত্র খাজানুর বাবু ও দোকানদার মাহবুব গুলিবিদ্ধ হন। তাদেরকে প্রথমে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধের মধ্যে ফেরিওয়ালা আব্দুর রহিমের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ডাক্টার শরিফা বেগম।

এছাড়াও এ ঘটনায় পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হয় আরও ১০ জন।

রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিসার্কেল) আবু আশরাফ সিদ্দিকী জানান, একটি পক্ষ প্রিজাইটিং অফিসারকে তুলে নিয়ে গিয়ে কেন্দ্র দখল করে সিল মারার চেষ্টা করলে তাদের ‍গুলি ও লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়। এ সময় ২ রাউন্ড গুলি করা হয়।

বিষ্ণপুর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার বিরাজ জানান, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর স্ত্রীসহ অন্যান্যরা কেন্দ্র থেকে চলে যাওয়ার পর এই ঘটনা ঘটে। তারা কেন্দ্রে এসে কেন্দ্রের পরিবেশ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করে চলে যান। তিনি আরও জানান, ঘটনার সময় আমি ‍বি সার্কেলের সাথে ছিলাম। আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম যাতে গুলি বা লাঠিপেটা না করে। কিন্তু তিনি আমার কথা না শুনে বাইরে নিরপরাধ ব্যক্তিদের ওপর পরপর ৪ রাউন্ড গুলি করে। এতে আমার চাচাসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। পুলিশ তাদেরকে হাসপাতালে নেয়নি। আমি স্থানীয়দের সহেযাগিতায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এই ইউপি মেম্বারের দাবি একটি সুষ্ঠু ভোটকে বিতর্কিত করে পুলিশ এই ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন তিনি।

রংপুরের ডিসি মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এবার ভোট পোল হয়েছে ৩৪ দশমিক ৫। রংপুরের ৬টি আসনের ৮৪৮টি কেন্দ্রে বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ হয়।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply