তাজনুর ইসলাম:
শীত বাড়ার সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অগ্নি দুর্ঘটনার সংখ্যা। আগুন পোহাতে গিয়ে, চুলার আগুন কিংবা গোসলের গরম পানি গায়ে পড়ে দগ্ধ হচ্ছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। মারাও যাচ্ছেন অনেকে। চিকিৎসকরা বলছেন, অসাবধানতায় বাড়ছে এসব দুর্ঘটনা।
এদিকে, রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিউটেও প্রতিনিয়ত বাড়ছে রোগীর চাপ। শুষ্ক মৌসুমে আগুন ব্যবহারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউটের বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে এক শিশু। জানা গেলো তার নাম ইমরান। ক’দিন আগেও তার চঞ্চলতা মাতিয়ে রাখতো সারা বাড়ি। কিন্তু এখন আগুনে ঝলসে শুয়ে আছেন হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে।
ইমরানের মতো আরও অন্তত শ’খানেক শিশু ভর্তি রয়েছে বিশেষায়িত এই হাসপাতালে। যাদের বেশিরভাগই দগ্ধ হয়েছে গত দুই-তিন সপ্তাহের ভেতরে।
আরও রোগীদের সাথে কথা বলে মোটা দাগে এসব দুর্ঘটনার ৪ রকমের কারণ খুঁজে পেয়েছে এই প্রতিবেদক। যেগুলো হচ্ছে, আগুন পোহাতে গিয়ে দুর্ঘটনা। রান্না করতে গিয়ে কাপড়ে আগুন লাগা। গরম খাবার গায়ে পড়া। গোসলের গরম পানি গায়ে পড়া।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হচ্ছেন বড়রা। আর ছোটদের বেলায় গরম খাবার গায়ে পড়া ও গোসলের পানিতে দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
হাসপাতালেও দৃশ্যমান রোগীর চাপ। গেলো জুনে বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছিলো ৫৮১ জন। আর এই ডিসেম্বরে জরুরি বিভাগে এসেছে ১ হাজার ১২৬ জন! যা প্রায় দ্বিগুণ।
কারণ জানাতে গিয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, এখন যেহেতু শুষ্ক বাতাস তাই সাবধানে থাকতে হবে। অনেক সময় গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন খড়ের গাদা ও বেড়া দিয়ে যেসব ঘরবাড়ি থাকে সেসব জায়গায় স্ফুলিঙ্গ লাগলেই আগুন ধরে যাচ্ছে।
এছাড়া গিজার ব্যবহারে অসাবধানতাকেও দায়ী করেন তিনি। বলেন, অতিরিক্ত হিটের কারণেও দুর্ঘটনা ঘটছে। পরামর্শ দেন রুম হিটার ব্যবহারের ও সাবধানতা অবলম্বনের। শীতকালীন আগুনের এসব ঘটনা কমাতে সচেতনতার বিকল্প দেখছেন না বার্ন ইনস্টিটিউটের এই চিকিৎসক।
/এমএইচ
Leave a reply