হাত নেই তবুও ব্যাট-বল করেন এই ক্রিকেটার

|

ছবি: সংগৃহীত

এক অসম্ভবকে সম্ভব করে তোলার অনুপ্রেরণামূলক কাহিনী ‘টুয়েলভ ফেইল’ মুভিটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। শুধু কি রূপালি পর্দায়ই এমন হয়? না, বাস্তবের দুনিয়াতেও আছে এমন অনেক উদাহরণ। মনের জোর এবং ইচ্ছাশক্তির উপর ভর করেই এমনই একটি দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন কাশ্মীরের প্যারা ক্রিকেটার আমির হোসেন লোন।

হাত ছাড়া ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন দেখাকে অসম্ভব এক বাস্তবতা বলাই যায়। তবে সেই অসাধ্যকে বাস্তবে রুপ দিয়েছেন কাশ্মীরের ওয়াঘামা গ্রামের বাসিন্দা আমির। ১৯৯০ সালে জন্ম হওয়া আমিরের স্বপ্ন ছিল বড় ক্রিকেটার হওয়ার। কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।

বাবার কারখানায় কাজ করার সময় মাত্র আট বছর বয়সেই হারাতে হয়েছিল দুই হাত। কিন্তু এরপরও দমে যাননি। সত্যি সত্যি আমিরের পরিচয় এখন ক্রিকেটার। আমির হোসেন লোন বলেন, ওই দুর্ঘটনার পরও আমি আশা হারাইনি। কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমি নিজেই সবকিছু করতে পারি। আমি কারও ওপর নির্ভরশীল নই। আমার দুর্ঘটনার পর কেউ আমাকে কোনও সাহায্য করেনি। আমার পরিবার সবসময় আমার পাশে ছিল।

সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে আমিরের ক্রিকেট অনুশীলনের একটি ভিডিও। কিংবদন্তী ক্রিকেটার টেন্ডুলকারের জার্সি পরে ব্যাট হাতে তৈরি করছেন নিজেকে। যেখানে কাঁধ দিয়েই ব্যাট চেপে ধরছেন আমির। তারপর অবলীলায় মারছেন শট। শুধু ব্যাটিং নয় করছেন বোলিংও। হাত না থাকায় বোলিংটা আয়ত্ত করেছেন পা দিয়েই।

বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীরের প্যারা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক আমির। তার ক্রিকেটীয় প্রতিভা নজর কাড়ে এক কোচের। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। খেলছেন পেশাদার ক্রিকেট। তিনি বলেন, আমি ২০১৩ সালে দিল্লিতে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলাম। ২০১৮ সালে আমি বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলাম। এরপর নেপাল, শারজাহ এবং দুবাইয়ে ক্রিকেট খেলেছি। আমাকে আমার পা দিয়ে বোলিং এবং কাঁধ ও ঘাড় দিয়ে ব্যাটিং করতে দেখে সবাই অবাক হয়ে গেছে। আমি ক্রিকেট খেলার শক্তি দেওয়ার জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ জানাই।

ক্রিকেটের প্রতি এমন উৎসাহ ও তার প্রতিভা দেখে মুগ্ধ হয়েছেন মাস্টার ব্লাস্টার শচিন টেন্ডুলকার এবং আশিস নেহরার মতো ক্রিকেট কিংবদন্তিরাও।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply