মাছের বিকিকিনিতে চলছে জামাই মেলা

|

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর:

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বিনিরাইল গ্রামে চলছে জামাই মেলা। গতকাল রোববার (১৪ জানুয়ারি) শুরু হয় তিনদিনের এই মেলা। এই আয়োজনের বড় আকর্ষণ হচ্ছে বড় মাছ ক্রয় নিয়ে জামাই-শ্বশুরের প্রতিযোগিতা। নতুন বা পুরনো জামাইরা মেলার সময় বড় মাছ কিনে শ্বশুর বাড়িতে যাবে। পাশাপাশি শ্বশুর বাড়িতেও চলে আয়োজন।

মেলায় গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালীয়া, মোক্তারপুর ও জামালপুর ইউনিয়নের ত্রি-মোহনার বিনিরাইল গ্রামের বিরাট এলাকাজুড়ে মাছের পসরা সাজিয়ে মেলা বসিয়েছেন অস্থায়ী প্রায় ২ হাজার দোকানদার। এসব স্টলে মাছ বিক্রি করতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছুটে এসেছেন অনেকে। তারা নানা অঙ্গভঙ্গি করে সুর ধরে ডেকে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন। কেউ কেউ বড় আকৃতির মাছ উপরে তুলে ধরে ক্রেতাদের ডাকছেন।

প্রতি বছর মাঘ মাসের প্রথম দিন এ মেলা বসে। দিনটির জন্য সারাবছর অপেক্ষায় থাকে গাজীপুরসহ আশপাশের কয়েক জেলার মানুষ।

এই মেলার মূল ক্রেতারা হলেন, গাজীপুরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে যারা বিয়ে করেছেন, সেসব জামাই। জামাইরা চান সবচেয়ে বড় মাছটি কিনে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যেতে। আবার শ্বশুরদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা চলে মেলার সবচেয়ে বড় মাছটি কিনে জামাইকে আপ্যায়ন করানোর।

স্থানীয়রা জানান, মেলা উপভোগ করতে টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকেও ছুটে এসেছে অনেকে। আর মেলায় বিক্রেতারা হাজির হয়েছেন সামুদ্রিক চিতল, বাঘাইড়, আইড়, বোয়াল, কালিবাউশ, পাবদা, গুলশা, গলদা চিংড়ি, বাইম, কাইক্কা, রূপচাঁদাসহ নানা জাতের দেশি মাছ।

স্থানীয় বাসিন্দা মসফিকুর রহমান আকন্দ বলেন, শীতে আমাদের গ্রামে নানা উৎসব হয়। এরমধ্যে জামাই মেলা অন্যতম। গাজীপুরের বিভিন্ন গ্রামে এই দিনটিতে অনেকে আনন্দ-উল্লাস করেন। বিশেষ করে নতুন জামাইরা।

এদিকে, মেলার আয়োজন নিয়ে কেউ কেউ অভিযোগও করছেন। রূপগঞ্জ থেকে মো. নাদিম আহমেদ নামের একজন জানান, মেলার কারণে যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া, সুশান্ত দাস নামের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, দোকান অনুযায়ী চাঁদা দেয়া হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো সুযোগ-সুবিধা দেয়নি।

জামালপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি কিশোর আকন্দ বলেছেন, প্রায় ২৫০ বছরের অধিক সময় ধরে এ মেলার আয়োজন হয়ে আসছে। শুরুতে খুবই ক্ষুদ্র পরিসরে হইতো। প্রথমে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরাই মেলার আয়োজন করতো। মেলাটি এখন সর্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply