মুন্সিগঞ্জে উচ্ছেদ অভিযানে হামলা, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৬

|

মুন্সিগঞ্জ করেসপনডেন্ট:

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিএডব্লিউটিএ) উচ্ছেদ অভিযানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এক পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৬ জন। অপরদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৩ রাউন্ড গুলি ছুড়েছে পুলিশ।

আহতরা হলেন পুলিশ কনস্টেবল আনোয়ার (২৯), আনসার সদস্য আনোয়ার হোসেন (৫৩), বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক সুপারভাইজার শহিদুল ইসলাম (৩৫), সংস্থাটির কর্মচারী মুন্সী আব্দুল্লাহ (৩৬) ও সাইদুল (৪১) এবং প্যাসিফিক গ্রুপের শ্রমিক ইসমাইল হোসেন (২০)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকাল দশটার দিকে গজারিয়ার বাউশিয়া ইউনিয়নের বসুরচর এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে অভিযান শুরু করে বিআইডব্লিউটিএ। গোমতী নদীতে ফকির গ্রুপ ও প্যাসিফিক গ্রুপের দখল করা ১২০ বিঘা জমি দখলমুক্ত করতে স্থাপনা ও দেয়াল ভেঙে দিচ্ছিল বিআইডব্লিউটিএ। অভিযান চলাকালে দুপুর ২টার দিকে এস্কেভেটরের ধাক্কায় প্যাসিফিক গ্রুপের গ্যাস কম্প্রেসার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিকরা তখন বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর চড়াও হয়। তখন প্রতিষ্ঠানটির অন্তত দুই শতাধিক শ্রমিক জড়ো হয়ে অভিযান পরিচালনাকারীদের ধাওয়া করে।

পরবর্তীতে, শ্রমিকরা পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। এতে এক পুলিশ কনস্টেবল ও এক আনসার সদস্যসহ অন্তত ৬ জন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৩ রাউন্ড গুলি চালায় পুলিশ। এ ঘটনায় ইসমাইল হোসেন নামে এক শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছে প্যাসিফিক গ্রুপ।

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ বলেন, হাইকোর্টের আদেশ বাস্তবায়নে আমরা এখানে এসেছিলাম। যৌথ জরিপের মাধ্যমে দখলকৃত জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা সেখানকার অবৈধ স্থাপনা ও সীমানা দেয়াল ভেঙে দেয়ার সময় আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বিআইডব্লিউটিএর মেঘনাঘাট নদীবন্দরের উপ-পরিচালক শরিফুল ইসলাম জানান, প্রতিষ্ঠান দুটি নদীর প্রায় ১২০ বিঘা জমি দখল করে রেখেছিল। আমরা প্রায় ৩৫০০ ফিট দেয়াল ভেঙে দিয়েছি। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা চলতেই থাকবে।

এ সম্পর্কে প্যাসিফিক ইন্টিগ্রেইটেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের মহাব্যবস্থাপক (এডমিন ) ইউনুস আলী বলেন, যেভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে তা অমানবিক। সরকারি জায়গায় আমাদের স্থাপনা থাকলে আমরা তা সরিয়ে দিতাম। আমরা তাদের কাছে সময় চেয়েছিলাম কিন্তু তারা সময় দেননি। তাদের কারণেই পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়েছে।

অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন ফকির গ্রুপের প্রতিনিধি বাবুল আহমেদ। তিনি বলেন, অভিযানের ব্যাপারে আগে থেকে আমাদের কোনো নোটিশ দেয়া হয়নি। সকালে অভিযানের খবর পেয়ে আমরা এখানে ছুটে আসি। জায়গাটি ডিসি অফিস থেকে আমাদের ইজারা দেয়া হয়েছে। আমরা তাদের সকল কাগজপত্র দেখিয়েছি। কিন্তু তারা তা আমলে না নিয়ে আমাদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে।

মুন্সিগঞ্জ সদর-গজারিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার থান্দার খায়রুল হাসান বলেছেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

/এএস/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply