ফুটবলার থেকে মুরলিনের ধর্মপ্রচারক হওয়ার গল্প

|

ছবি: সংগৃহীত

ফুটবলের চাকচিক্যময় জীবন, অর্থ-বিত্ত, তারকা খ্যাতি সব কিছুর মোহ বাদ দিয়ে ভিন্ন এক জীবন বেছে নিয়েছেন ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার ফিলিপ মুলরিন। সব কিছু পুরোপুরি ছেড়ে দিয়ে পুরোদস্তুর ধর্মপ্রচারক বনে গেছেন তিনি। ২০১৭ সাল থেকে ক্যাথলিক গির্জায় যাজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক ফুটবলার মুলরিন।

ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ফুটবলার ফিলিপ মুলরিন। যদিও এই ক্লাবের হয়ে একটির বেশি ম্যাচ খালা হয়নি তার। অবশ্য এই ক্লাব দিয়েই যাত্রা শুরু বয়সভিত্তিক দলের। এরপর পাড়ি দেন নরউইচ সিটিতে। প্রিমিয়ার লিগে ৬ বছরে নরউইচের হয়ে বার্ষিক ৫ লাখ পাউন্ড বেতনে খেলেছেন ১৬১ ম্যাচ।

এরপরই তার ক্যারিয়ার ধ্বস নামতে শুরু করে ২০০৫ সালে। যখন নরউইচ ছেড়ে পাড়ি যমান কার্ডিফ সিটিতে। শেষ পর্যন্ত মুরলিন ফুটবলটাকেই বিদায় জানিয়ে দেন ২০০৮ সালে। তবে ফুটবলের চাকচিক্যময় জীবন, অর্থ-বিত্ত, নারী কোন কিছুই টানেনি তাকে। হেঁটেছেন একটু ভিন্ন পথে। অন্যান্যদের মতো কোচ, ধারাভাষ্যকার কিংবা বিশ্লেষকের দায়িত্ব বেছে নেননি তিনি।

পুরোদস্তুর ধর্মপ্রচারক বনে যান মুরলিন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে ক্যাথলিক গির্জায় যাজক হিসেবেও দায়িত্ব পান সাবেক এই ফুটবলার। মূলত ফুটবলের প্রতি ভালবাসা হারাতে শুরু করেন ৩১ বছর বয়সে। সেই সময়ই তিনি ঝুঁকে পড়েন ধর্মের দিকে। যে কারণে মনোযোগ দিতে পারছিলেন না পারফম্যান্স ও ক্যারিয়ারে। শেষ পর্যন্ত নিজের জীবনধারাই বদলে ফেলেন এই ফুটবলার।

ফিলিপ মুরলিন বলেন, কোন মুহূর্তে এটা ঘটেছিল, সেটা আলাদা করে বলা কঠিন। আমি বলবো, এটা আমার নরউইচে থাকার সময় শেষ বছরে শুরু হয়েছিল। যদিও স্পষ্টভাবে নয় এবং আমি এটা নিয়ে তেমন ভাবছিলামও না। তবে নিজের জীবনধারা নিয়ে আমি অসন্তুষ্টিতে ভুগছিলাম তখন।

হঠাৎ কেন এমন পরিবর্তন, কি চলছিল মনের মধ্যে, সেটাও জানান মুরলিন। তিনি বলেন, ফুটবলার হিসেবে আমাদের জীবনটা দারুণ। এক্ষেত্রে আমি অনেক সৌভাগ্যবানও। কিন্তু সবকিছুর পরও জীবনে একধরনের শূন্যতা ছিল। আমি কেন সুখী নই, এটা ভেবে কিছুটা স্তব্ধ ছিলাম। অথচ একজন তরুণ হিসেবে আমার কাছে সবকিছুই ছিল। এসব চিন্তাই আমাকে বদলে দেয়। পরিচালিত করে বিশ্বাস ফিরে পাওয়ার দিকে। তখন আমি এক বছরের জন্য বাড়ি ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। আর সে বছরই সবকিছু বদলে যেতে শুরু করে।

এরপর থেকে নিয়মিত প্রার্থনা শুরু করার ফলে জীবনে পূর্ণতার স্বাদ খুজে পান এই ফুটবলার। একপর্যায়ে পুরোপুরিই ধর্ম প্রচারে মনোনিবেশ করেন সাবেক এই রেড ডেভিল তারকা। তবে একেবারে বিতর্কমুক্ত ছিল না বদলে যাওয়া মানুষটির ফুটবল ক্যারিয়ার। ২০০৫ সালে মদ খেয়ে কারফিউ ভাঙায় নর্দান আয়ারল্যান্ডের স্কোয়াড থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাকে। এছাড়া মডেল নিকোলা চাপম্যানের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়েও শিরোনামে এসেছিলেন মুলরিন।

এসব এখন শুধুই অতীত। ফিলিপ মুরলিন এখন পুরোপুরি আত্মাধিক জীবনযাপন করেন। বদলে যাওয়া জীবনে একাগ্রচিত্তে ধর্মযাজকের কাজটাই করছেন তিনি।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply