বাসস, লন্ডন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কখনো কোন সমস্যা দেখে ভয় পায় না এবং মিয়ানমার থেকে নির্মমভাবে তাড়িয়ে দেয়া লাখ লাখ লোক বাংলাদেশে চলে আসা সত্ত্বেও এদেশ এগিয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় অন্যান্য দেশের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তার হোটেল কক্ষে শেখ হাসিনার মতবিনিময়ের বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা বাঙ্গালী জাতি যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি। ফলে কোন সমস্যা দেখা দিলে আমরা কখনো ভয় পাই না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বরং এই সমস্যা মোকাবেলা করার মাধ্যমে আরো এগিয়ে যেতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের একজন সিনিয়র প্রতিনিধির সাম্প্রতিক ঢাকা সফরের মাধ্যমে এ সংকট সমাধানে নেপিদোর সাথে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে বাংলাদেশের জনগণ সব সময় মানবতায় বিশ্বাস করে। মানবিক দিক বিবেচনা করে মিয়ানমার ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হওয়া এসব লোকজনকে আশ্রয় দিতে আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য। ফলে আমরা তাদেরকে (মিয়ানমারের জনগণ) বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে পারি না। আমরা ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারলে তাদের এই চরম দুঃসময়ে অতিরিক্ত ৫ থেকে ৭ লাখ লোককেও আমরা খাওয়াতে পারবো।’
এক্ষেত্রে ‘প্রয়োজন হলে আমরা দিনে এক বেলা খাবো এবং অপর বেলার খাবার চরম বিপদে পড়া এসব লোককে দেবো। আমরা ধনী না হলেও আমাদের হৃদয় অনেক বড় এবং আমাদের অবস্থান মানবতার পক্ষে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দুর্ভাগা রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের ভাসান চরে স্থানান্তর করা হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে অংশ নিতে নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ছোট বোন শেখ রেহেনাকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজারে বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন এবং তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসা নারী ও শিশুদের কাছ থেকে তাদের বিভিন্ন লোমহর্ষক অভিজ্ঞতার বর্ণনা শোনেন।
তিনি বলেন, জন প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং তাঁর দলের স্বেচ্ছাসেবকরা এসব লোকের ভোগান্তি দূর করতে কঠোর পরিশ্রম করছে।
তিনি বলেন, ‘কোন বৈদেশিক সাহায্যের অপেক্ষায় না থেকে আমরা সাধ্য অনুযায়ী তাদের থাকা, খাওয়া ও ঔষধের ব্যবস্থা করেছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের জনগণের এ ধরণের বদান্যতা দেখে বিস্মিত হয়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিশ্বাসঘাতকদের হাতে বঙ্গবন্ধু নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর শেখ হাসিনা বিদেশে শরণার্থী হিসেবে তাঁর নিজের জীবনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমি ও আমার বোন ছয় বছর ধরে এ ধরণের জীবনযাপন করায় শরণার্থী জীবনের ব্যাপারে আমরা ভাল জানি।’
Leave a reply