রিমন রহমান:
গার্মেন্টস পণ্য রফতানি নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। প্রধান দুই গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাজারে কমেছে রফতানি। বিশেষ করে অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে জার্মানিতে রফতানির ক্ষেত্রে বড় ধরনের পতন হয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রফতানি কমার হার প্রায় ৬ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুধু বাংলাদেশই নয়, এই অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ থেকেই রফতানি কমেছে। তবে খুঁজে বের করতে হবে সঙ্কটের কারণ। কারণ, রফতানি আয় না বাড়ানো গেলে রিজার্ভ সংরক্ষণ হবে না। এতে নষ্ট হবে অর্থনীতির ভারসাম্য।
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক ফয়সাল সামাদ বলেন, এই খাতে যেখানে খরচ বেড়ে চলছে, সেখানে ক্রেতাদের তেমন সাড়া পাচ্ছি না। অর্থাৎ পোশাকের দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে সাড়া পাচ্ছি না। তারা বলছে, অর্ডার দেবে এবং আরও বেটার প্রাইস করতে হবে। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতেও অর্ডার কম। তারাও উঠেপড়ে লেগেছে। এটা কঠিন পরিস্থিতি। আমরা কেউ বলতে পারবো না ভালো পরিস্থিতিতে আছি।
মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার কারণে নতুন করে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। লোহিত সাগর দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল না করায় খরচ ও সময় দুই-ই বেশি লাগছে। বলা হচ্ছে, যুদ্ধ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তৈরি পোশাক রফতানি স্থিতিশীল হবে না। সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে কৌশল বের করতে হবে।
ফয়সাল সামাদ বলছিলেন, পরবর্তী এক বছরের জন্য ব্রিজ ফাইন্যান্সিং বা লো ইন্টারেস্টের একটা সহায়তা দরকার। কেবল আমাদের খাতে। কারণ, খরচ বাড়ছে; এক বছর সময় পেলে ক্রেতার সাথে এর মধ্যে আবার বোঝাপড়ার মাধ্যমে বেটার প্রাইস নিয়ে আমরা ফেরত আসতে পারবো বলে মনে করি।
এদিকে, বিশ্বব্যাপী বেড়েছে মূল্যস্ফীতি। এতে করে নিত্যপণ্য ও জ্বালানি ছাড়া অন্যান্য পণ্য কেনা কমিয়েছেন ভোক্তা। এর ফলে পোশাক রফতানির আদেশ কমতে থাকে। তবে বিভিন্ন পদক্ষেপের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে এসেছে পোশাক আমদানিকারক দেশগুলো। কেটে যেতে পারে সঙ্কট।
গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ইউরোপের অভ্যন্তরীণ প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এক ধরনের স্থুল প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। এর একটা অভিঘাত পড়ছে পণ্য রফতানিতে। আমাদের অপেক্ষা করা এবং তাকিয়ে থাকার বিষয় আছে, ইউরোপের দেশগুলো আবার কখন স্বাভাবিক কর্মসংস্থান ফিরতে পারে এ বিষয়ে।
বলা হচ্ছে, রফতানিকারক দেশগুলোর সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পোশাকের দাম বৃদ্ধি করা সম্ভব।
/এমএন
Leave a reply