ভারতের তারকা ক্রিকেটার রিংকু সিংয়ের বাবা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন দ্বারে দ্বারে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির কাজ। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে সিলিন্ডার বিলি করতে দেখা গেছে খানচাঁদ সিংকে। আলীগড়ের গরীব পরিবার থেকে উঠে আসা রিংকুর জীবন বদলে গেলেও, বদলায়নি তাদের সাধারণ জীবনযাপনের গল্প।
‘যে সারাজীবন পরিশ্রম করে যাওয়া মানুষ, সে নিজে না চাওয়া পর্যন্ত তাকে থামানো কঠিন’। তারকা খ্যাতি পাওয়ার পর এক সাক্ষাৎকারে কথাটি বলেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার রিংকু সিং। গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রেতা বাবা খানচাঁদ সিংকে উদ্দেশ্য করে বলা তার এই কথা মিলে গেল হুবহু। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে রিংকুর বাবা এখনও বিলি করে বেড়াচ্ছেন সেই গ্যাস সিলিন্ডার।
গত আইপিএলে পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে আলোচনায় আসেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের ব্যাটার রিংকু সিং। গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে ২১ বলে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জয়ের নায়ক বনে গিয়েছিলেন এই মারকুটে ব্যাটার। বিধ্বংসী সেই ইনিংসের পর জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ওঠে রিংকুর, খেলেছেন ২ ওডিআই ও ১৫ টি-টোয়েন্টি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম ভরসার নাম রিংকু সিং।
ম্যাচ ফি থেকে শুরু করে বেতন-ভাতা কিংবা ব্র্যান্ড ভ্যাল্যু। আইপিএলের পর ভারতীয় জার্সি গায়ে উঠলে ওই ক্রিকেটারের উপার্জন কোন পর্যায়ে পৌঁছায় সে বিষয়ে ধারণা আছে সবার। তাই স্বাভাবিক ভাবেই অর্থকড়ি নিয়ে রিংকু সিংয়ের পরিবারের দুশ্চিন্তাটা আপাতত না থাকারই কথা।কিন্তু রিংকুর বাবা যেন এখনও তার সেই পুরনো কাজটাই আঁকড়ে থাকতে চান। কিছুদিন আগে এ নিয়ে কথাও বলেছিলেন রিংকু।
রিংকু সিং বলেন, বাবাকে বলেছি বিশ্রাম নেয়ার জন্য। আমাদের অবস্থা এখন যথেষ্ট ভালো। বাবার প্রতিদিন ভারী সিলিন্ডারগুলো তোলার কোনও দরকার নেই। কিন্তু বাবা এখনো এই কাজ করেন, আর এটাই তিনি ভালবাসেন।
উত্তর প্রদেশের ছোট শহর আলিগড়ের গরীব পরিবার থেকে উঠে আসা রিংকুর এক ভাই চালাতেন অটোরিকশা, এক ভাই কাজ করতেন কোচিংয়ে। রিঙ্কু নিজেও ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি করেছেন ঝাড়ুদারের কাজ, সাহায্য করতেন বাবার সিলিন্ডার প্রোভাইডারের কাজেও। ২০১৮ সালে আইপিএলের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স তাকে ৮০ লাখ রুপিতে কেনার পর অবশ্য আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি রিংকু সিংকে।
জীবনের অনেক কিছুই বদলে গেলেও রিংকুর পরিবারের সাধারণ জীবনযাপনের প্রতি টানটা একদমই বদলায়নি। রিঙ্কুর বাবা-মা এখনও আলীগড়ের গ্যাস এজেন্সিতে নির্মিত পুরানো কোয়ার্টারে বসবাস করছেন। বর্তমানে অবশ্য নিজে একটি বড় বাড়ি তৈরি করছেন রিংকু। সেখানেই বাব-মাকে নিয়ে রাখার ইচ্ছে। এছাড়াও শিশুদের থাকার জন্য আলীগড়ের মহুয়া খেড়া স্টেডিয়ামে একটি হোস্টেলও তৈরি করছেন রিংকু।
/আরআইএম
Leave a reply