বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা খুলনা টাইগার্সকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় ও আসরে তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল। আগে ব্যাট করতে নেমে ফাহিম আশরাফ, মোহাম্মদ নওয়াজের ব্যাটিং তাণ্ডবে ১৫৬ রানের লড়াকু সংগ্রহ পায় খুলনা। লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শোয়েব মালিক, মেহেদী হাসান মিরাজের অনবদ্য ফিনিশিংয়ে ২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বরিশাল।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ ভালো শুরু পেয়েছিলেন খুলনার অধিনায়ক আনামুল হক বিজয়। তবে ১৩ বলে ১২ রান করা বিজয়কে থিতু হতে দেননি পাকিস্তানি পেসার আকিফ জাভেদ। পাকিস্তানি এই পেসারের ফুল লেংথের ডেলিভারিতে প্যাডেল স্কুপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করে বোল্ড হন তিনি। এরপর রান আউট হয়ে কাটা পড়েন হাবিবুর রহমান সোহান। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২ রান।
একপ্রান্ত আগলে রাখা ইমন আউট হন শোয়েব মালিকের টসড আপ ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হয়ে। তাতে শেষ হয়েছে ইমনের ২৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংসের। পরের বলে তিনি আফিফ হোসেন ধ্রুবকে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ বানান মেহেদী হাসান মিরাজের। এদিকে মাহমুদুল হাসান জয়কে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি তাইজুল ইসলাম।
বাঁহাতি এই স্পিনারের বেরিয়ে যাওয়া গুড লেংথ ডেলিভারিতে উইকেট থেকে বেরিয়ে খেলতে গিয়ে বলেন লাইন মিস করেন ১৩ রান করা জয়। তাতে বল গ্লাভসবন্দি করে সহজেই জয়কে স্টাম্পিং করেন মুশফিকুর রহিম। নিজের পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে দারুণ এক ডেলিভারিতে দাসুন শানাকাকে বোল্ড করেন তাইজুল।
শেষদিকে প্রতিরোধ গড়তে ব্যর্থ হন নাহিদুল ইসলামও। তিনি মাত্র ৫ রান করে মোহাম্মদ ইমরান জুনিয়রের লেংথ বলে বোল্ড হন। শেষ চার ওভারে ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন খুলনার দুই পাক অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মদ নাওয়াজ। এই দুইয়ের ব্যাটে চড়ে খুলনা ইনিংস শেষ করে ১৫৫ রান স্কোরবোর্ডে জমা করে। শেষ ২৪ বলে খুলনা পায় ৬৭ রান। ২৩ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত থাকেন নাওয়াজ। আর ইনিংসের শেষ বলে রান আউটে উইকেট হারানোর আগে ফাহিম আশরাফের ব্যাট থেকে ১৩ বলে আসে ৩২ রান।
১৫৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ইনিংসের শুরুতেই বিদায় নেন আহমেদ শেহজাদ। নাহিদুল ইসলামের বলে এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বল মিস করে স্টাম্পড হন শেহজাদ। এর ফলে ডাক হয়ে এদিন প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় বরিশালের এই পাক ওপেনারকে। তবে দারুণ শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বাউন্ডারির চাহিদায় উড়িয়ে মারতে গিয়ে তামিম ক্যাচ হন ডিপ স্কয়ার লেগ অঞ্চলে। ফাহিম আশরাফের প্রথম শিকার হওয়ার আগে ১৮ বলে করেন ২০ রান।
তিনে নামা সৌম্য সরকারের উইকেটও দখলে নেন ফাহিম আশরাফ। পরপর দুই ওভারে তামিম ও সৌম্যকে ফিরিয়ে খুলনাকে ম্যাচে ফেরান ফাহিম। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ২৩ বলে ২৬ করেন সৌম্য। শোয়েব মালিকের সাথে জুটি গড়ে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যাওয়ার বদলে মুশফিকুর রহিমও উইকেট হারান ব্যক্তিগত ২৭ রানে। ৪ রানের বেশি করতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ আর শোয়েব মালিক মিলে বরিশালকে জয়ের পথে নেয়ার চেষ্টা চালান। শেষদিকে এই দুইয়ের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের কল্যাণে শেষ ওভারে জয়ের জন্য সমীকরণ দাঁড়ায় ১৮ রানের। খুলনার অধিনায়ক বিজয় বল তুলে দেন দাসুন শানাকার হাতে। স্ট্রাইকে থাকা মিরাজ প্রথম বলেই হাঁকান ছক্কা। পড়ের বলে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন মালিককে। পাকিস্তানি অলরাউন্ডার পর পর দুই বলে চার ও ছক্কা হাঁকালে বরিশালের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২ বলে ১ রান। তবে তার জন্য কষ্ট করতে হয়নি বরিশালের ব্যাটারদের। ওয়াইড দিয়েই বরিশালের জয় নিশ্চিত করে দেন শানাকা।
/আরআইএম
Leave a reply