ইউরোপজুড়ে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে কৃষকদের বিক্ষোভ। জার্মানি, ফ্রান্সসহ অনেক দেশে রাস্তা অবরোধ করছেন কৃষকরা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়ায় এ অস্থিরতা। ইউক্রেনের সস্তা পণ্যের কারণে নিজেদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না স্থানীয় চাষিরা। কৃষকদের অভিযোগ, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় আর সার-ডিজেলের অতিরিক্ত দামে তারা দিশেহারা। শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, হঠাৎ ইউরোপজুড়ে কৃষকদের মাঝে এমন অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে অঞ্চলটির নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতাকে দায়ী করা হচ্ছে। ক্ষুব্ধ চাষিদের অভিযোগ, দিন দিন বেড়েই চলছে জীবনযাত্রার ব্যয়। ঊর্ধ্বমুখী সার, ডিজেলের দাম ও পরিবহন খরচ। বিপরীতে, প্রাপ্য মূল্য ও মজুরি পাচ্ছেন না তারা। পরিবেশ রক্ষার নামে চাষাবাদে কঠোর নীতিমালা আরোপ করে তাদের বিপাকে ফেলার অভিযোগও তুলছেন ইউরোপের কৃষকরা।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী সুইজারল্যান্ডের একজন কৃষক বলেন, আমার শঙ্কা, সুইজারল্যান্ডে হয়তো একদিন কৃষি বলতে আর কিছুই থাকবে না। সরকারের দুর্বল নীতির কারণেই এটি ঘটবে। আমাদের একটি টেকসই কৃষিব্যবস্থা প্রয়োজন।
তিনি আরও বলেন, ক্রেতাদের বলবো দয়া করে আমাদের কাছে আসুন, দেখুন আমরা কত কষ্ট করে ফসল ফলাই, পশু পালন করি। আপনাদের পণ্য কোথা থেকে আসে দেখে যান। সুপার মার্কেট থেকে অন্য দেশের পণ্য না কিনে, আমাদের কাছ থেকে কিনুন।
ইউরোপিয়ান পলিসি সেন্টারের নীতি বিশ্লেষক ব্রুক মুর বলেন, বিক্ষোভের অনেকগুলো কারণ রয়েছে। অবশ্য টেকসই কৃষি ব্যবস্থা এরমধ্যে অন্যতম। তবে, কৃষকদের এই আন্দোলনের পেছনে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধও একটি বড় ফ্যাক্টর। শুল্কমুক্ত সুবিধা পাচ্ছে ইউক্রেন, আর তাই ইউরোপের বাজারে তাদের পণ্যের দাম তুলনামূলক কম, যা স্থানীয় চাষিদের চরম সংকটে ফেলেছে।
এর আগে, গত বছর পূর্ব ইউরোপের কয়েকটি দেশেও ইউক্রেন থেকে কম দামে শস্য আমদানির প্রতিবাদে আন্দোলন হয়। বিক্ষোভ করেন পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া, বুলগেরিয়া ও রোমানিয়ার কৃষকরা। চাপের মুখে সেসময় ইউক্রেন থেকে আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় দেশগুলো।
Leave a reply