গ্রেনেড হামলা একটি রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্য চক্রান্ত: আদালত

|

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাকে ‘একটি রাজনৈতিক দলকে নিশ্চিহ্ন করার ঘৃণ্য চক্রান্ত’ বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার দুপুরে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে অবস্থিত ঢাকার ১নং অস্থায়ী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নুর উদ্দিন ঐতিহাসিক এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।

এতে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া ১৯ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেন, ‘প্রশ্ন উঠে কেন এই মারণাস্ত্রের ব্যবহার? রাজনীতি মানেই কি বিরোধী দলের ওপর পৈশাচিক আক্রমণ? শুধু আক্রমণই নয় দলকে নেতৃত্ব শূন্য করার ঘৃণ্য চক্রান্ত।’

পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, ১৯৭৫ সোলের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করার পর জাতীয় চার নেতাকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয়। কিন্তু ষড়যন্ত্র থেমে না গিয়ে বহমান থাকে। পরবর্তীতে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শনিবার আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব শূন্য করার হীন প্রচেষ্টা চালানো হয়। ‘শেখ হাসিনাকে হালকা নাশতা করানো হবে’- এই উদ্বৃতি দিয়ে দেশীয় জঙ্গি সংগঠনের কতিপয় সদস্য আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সহায়তায় হামলা করে।

পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়, তৎকালীন রাষ্ট্রীয় যন্ত্রের সহায়তায় প্রকাশ্য দিবালোকে ঘটনাস্থল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কাযালয় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সম্মুখে যুদ্ধে ব্যবহৃত স্পেশালাইজড মারণাস্ত্র, আর্জেস গ্রেনেড বিস্ফোরণের মাধ্যমে ঘটনা ঘটানো হয়। প্রশ্ন উঠে- কেন এই মারণাস্ত্রের ব্যবহার? রাজনীতি মানেই কি বিরোধী দলের ওপর পৈশাচিক আক্রমণ? শুধু আক্রমণই নয় দলকে নেতৃত্ব শূন্য করার ঘৃণ্য চক্রান্ত। রাজনীতিতে অবশ্যম্ভীভাবে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী দলের মধ্যে শত বিরোধ থাকবে। তাই বলে বিরোধী দলকে নেতৃত্ব শূন্য করার প্রয়াস চালানো হবে? এটা কাম্য নয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ক্ষমতায় যে দলই থাকবেন, বিরোধী দলের প্রতি তাদের উদার-নীতি প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র সুপ্রতিষ্ঠিত করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকতে হবে। বিরোধীদলীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক ফায়দা অর্জন করা মোটেই গণতান্ত্রিক চিন্তা বহিঃপ্রকাশ নয়।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply