বিদ্রোহী জোটের প্রবল প্রতিরোধের মুখে নাকাল মিয়ানমার জান্তা। চিন, রাখাইন, কাচিনের মতো অন্তত ৮টি প্রদেশে একযোগে চলছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর গেরিলা হামলা। একের পর এক এলাকা হারানোয় সব মিলিয়ে প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিকভাবে চাপের মুখে সেনাশাসিত সরকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সংকটের সমাধান না হওয়ায়; সশস্ত্র আন্দোলনকেই বেছে নিয়েছেন দেশটির বিরোধীরা। এক প্রতিবেদনে কাতার ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গেল কয়েকদিন ধরেই মিয়ানমারের শান প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে সামরিক জান্তার সাথে চলছে, বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াই। এক মাসের বেশি সময় ধরে টিএলএনএ বিদ্রোহীরা কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। চাপের মুখে একের পর এক সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে পিছু হটছে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।
গেল অক্টোবরে, সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যৌথভাবে সশস্ত্র যুদ্ধ ঘোষণা করে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট এমএনডিএএ। অপারেশন ১০২৭ শুরুর পর থেকেই, কাচিন রাজ্যের পাশাপাশি শান, চিন, কায়িন, রাখাইনসহ ৮টি প্রদেশে বিদ্রোহীদের তুমুল প্রতিরোধের মুখে পড়ছে জান্তা বাহিনী। হিট অ্যান্ড রান পদ্ধতিতে গেরিলা হামলা চলছে সেনা চৌকিগুলোতে।
সবচেয়ে বড় প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছে শান এবং রাখাইন রাজ্যে। এরইমধ্যে, শান রাজ্যের ২০টি শহরের দখল নিয়েছে বিদ্রোহীরা। অন্যদিকে, রাখাইন রাজ্যের উপকূলীয় এলাকায় রামরি দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মির যোদ্ধারা।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, রাখাইনের প্রাদেশিক রাজধানী সিত্তেও ঘিরে ফেলেছে বিদ্রোহীরা। যেকোনো মুহূর্তে শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে জান্তা বাহিনী।
মিয়ানমারের নিযুক্ত সাবেক অস্ট্রেলীয় রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টোফার ল্যাম্ব বলেন, প্রশ্ন হলো কেন বিদ্রোহীরা, এভাবে মরনপণ লড়াইয়ে নামলো। উত্তর হলো, রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে মিয়ানমারে সংকট সমাধানের আর কোনো পথ খোলা নেই। তিন বছর আগে যখন সামরিক অভ্যুত্থান হলো, তখন থেকে এটা অনুমেয় যে কোনোভাবেই এই সামরিক সরকার তাদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে পারবে না। সময় যতই গড়াবে, বিদ্রোহীদের প্রতিরোধ আরো জোরালো হবে।
সামরিক জান্তা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সক্রিয় দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। সময় যতই গড়াচ্ছে, কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে গণতন্ত্রকামীরা।
এর আগে, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে গেল তিন বছরে, সেনা নির্যাতনে প্রাণ গেছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষের। আটক ২৫ হাজারের বেশি গণতন্ত্রপন্হি।
\এআই/
Leave a reply