পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগ নিহত বডিবিল্ডারের স্ত্রীর। গত ১২ জানুয়ারি স্বামীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর কায়েৎটুলি ফাঁড়িতে ছুটে যান তিনি। বারবার অনুরোধ করেও ছাড়াতে পারেননি শিশুদের বাবাকে।
জীবনসঙ্গী ফারুককে আর জীবিত ফিরে পাওয়া হয়নি স্ত্রী ঈমার। ১৫ জানুয়ারি ঢাকা মেডিকেলের মর্গ থেকে ফোন করে জানানো হয়, ফারুক আর বেঁচে নেই। পুলিশের চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেয়া এবং কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এমন পরিণতি বলে দাবি পরিবারের।
ঈমা আক্তার বলছিলেন, তারা (পুলিশ) আমাকে বাজে প্রস্তাব দিয়েছে। তারা টাকা না পেয়ে বলেছে, টাকা যেহেতু দেবেন না, তাহলে আমাদের দিকে দেখেন। আমাদের খুশি করেন, আমরা আপনার স্বামীকে ছেড়ে দেব।
আড়াইশ গ্রাম গাঁজাসহ ফারুককে আটকের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এরপর তার ওপর নির্যাতন চালানোর অভিযোগ করে পরিবার। এ ঘটনায় বংশাল থানার ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। যার তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। মামলা তুলে নিতেও হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পরিবারের।
বডিবিল্ডার ফারুকের স্ত্রী বলেন, নাম পরিচয় না দিয়ে একজন বলেছে– খামাখা মামলা করে কোনো লাভ নেই। মামলা উঠিয়ে নিতে বলা হয়েছে তাকে। সন্তানসহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান ঈমা।
ফারুকের ৩ শিশুর দুজন মাদরাসায় পড়ালেখা করছে। অন্যটি একেবারেই ছোট। তারা এখনও খুঁজে ফিরছে তাদের প্রিয় বাবাকে। কঠিন পৃথিবীতে তারা যে নিঃসঙ্গ হয়ে গেছে, তা বোঝার বয়সও হয়নি তাদের।
বডিবিল্ডার হিসেবে পুরান ঢাকার লালবাগ এলাকায় সুপরিচিত ছিলো ফারুক। একজন ব্যবসায়ীর বডিগার্ড হিসেবে চাকরিও করতেন। তার এমন মৃত্যুতে হতবাক এলাকার মানুষ। এলাকাবাসী জানায়, ফারুকের মতো কোনো ছেলে হয় না। সবসময় হাসিমুখে থাকে সে। আমরা কখনও দেখিনি, সে গাঁজা বা মাদকের ব্যবসা করে। তারা জানায়, যারা এভাবে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে তাকে, সুষ্ঠু তুদন্ত করে তার বিচার হোক, এটাই আমাদের দাবি।
এদিকে, এই ঘটনায় ডিএমপির লালবাগ বিভাগ আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যদিও তাদের দাবি, ফারুকের স্ত্রীর অভিযোগ মিথ্যা। তবে এই ঘটনার কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।
নিহত ফারুকের স্ত্রী ঈমা আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে তারা। আমি এর বিচার চাই। আমার তিন সন্তান এতিম হয়ে গেছে। এর বিচার চাই। আমি শুধু সুষ্ঠু বিচার চাই। আর কিছু চাই না।
/এএম
Leave a reply