৭৬ বছরে পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি কেউ

|

পাকিস্তানে অনিশ্চয়তার আরেক নাম প্রধানমন্ত্রীর পদ। স্বাধীন হওয়া পর, ৭৬ বছরের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত দেশটির একজন প্রধানমন্ত্রীও পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। সর্বোচ্চ চার বছর ৮৬ দিন প্রধানমন্ত্রী থাকার কৃতিত্ব ইউসুফ রাজা গিলানির। অন্যদিকে, নুরুল আমিন ক্ষমতায় ছিলেন মাত্র ১৩ দিন। প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খান হয়েছিলেন গুপ্তহত্যার শিকার। বাকিরা হয় বরখাস্ত নতুবা অভ্যুত্থানে পদ ছেড়েছেন।

১৯৪৭ সালে স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন লিয়াকত আলী খান। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই গুপ্তহত্যার শিকার হন মুসলিম লীগের এই নেতা।

লিয়াকত আলীর পর, পাকিস্তানে আরও অন্তত ১৯ জন ২২ বার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাদের কেউই পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। প্রথম বাঙ্গালি হিসেবে দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমউদ্দিন ক্ষমতায় ছিলেন দেড় বছর। সাঈদ মোহাম্মদ আলি ছিলেন বগুড়ার নাগরিক। তিনি মসনদে ছিলেন দুই বছর ৪ মাস। পাকিস্তানের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী হন আরেক বাঙ্গালি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। মাত্র এক বছর ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগ করেছিলেন তিনিও।

১৯৫৮ সাল পর্যন্ত ১১ বছরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন সাতজন। এরপর, সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা নেয় সেনাশাসকরা। দীর্ঘ একযুগ পর, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে, প্রধানমন্ত্রী হন নুরুল আমিন; মাত্র ১৩ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে তিনি গড়েন দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম সময় ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড। এরপর, জুলফিকার আলি ভুট্টো ও মুহাম্মদ আলী জুনেজু- কেউই পূর্ণ করতে পারেননি মেয়াদ।

বেনজির ভুট্টো দুইবার, আর নওয়াজ শরিফ এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনবার। এই দুজনও একাধিকবার ক্ষমতায় গেলেও একবারও পাঁচ বছর স্থায়ী হতে পারেননি। পরের ছয় প্রধানমন্ত্রীও পারেননি পূর্ণ মেয়াদে পদে থাকতে। এরমধ্যে, ইউসূফ রাজা গিলানি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৪ বছর ৮৬ দিন।

২২তম প্রধানমন্ত্রী আলোচিত ইমরান খান ক্ষমতায় থাকতে পেরেছেন ৩ বছর আট মাস। এরপর, তত্ত্বাবধায়কের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত ১ বছর চার মাসের জন্য প্রধানমন্ত্রীত্ব সামলেছেন শাহবাজ শরীফ।

কেউ পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন, কেউ আবার হয়েছেন বরখাস্ত। সামরিক অভ্যুত্থানের কারণেও প্রধানমন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন কয়েকজন। এছাড়া, দলের মধ্যে আস্থা হারিয়েও পদ ছাড়তে হয়েছে একাধিক প্রধানমন্ত্রীকে। অবশ্য, দেশটির রাজনীতিতে এই অস্থিরতার পেছনে সেনাবাহিনীকেই দায়ী করা হয়। সরাসরি সেনাশাসনের অধীনে তো ছিলোই, গণতান্ত্রিক সরকারের ওপরও বরাবরই হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply