পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে পার হয়েছে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময়। তবে এখনও সব আসনের ফলাফল ঘোষণা করা সম্ভব হয়নি। ধীর গতিতে ভোট গণনা শেষে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা চলছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম জি নিউজ বলছে, সর্বশেষ প্রাপ্ত ২০৪ আসনের বেসরকারি ফলাফল অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন ৮৭টি আসনে। যার মধ্যে কয়েকজন ছাড়া বাকিরা দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান খানের অনুসারী।
পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) জয় পেয়েছে ৬০টি আসনে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৪৫টি আসন। এছাড়া, মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট ৮টি, ইস্তেগাম পাকিস্তান পার্টি ২টি, পাকিস্তান মাসহি লিগ ও জমিয়ত উলামা-ই-ইসলাম (এফ) একটি করে আসনে জয় পেয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ২৬৬টি আসনে দেশটির জাতীয় পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সে হিসাবে আরও ৬২টি আসনে ফল ঘোষণা বাকি রয়েছে এখনও।
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে আসন রয়েছে মোট ৩৩৬টি। ২৬৬টি আসনের বাইরে বাকিগুলো নারী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য সংরক্ষিত। সংরক্ষিত মিলে এককভাবে সরকার গঠনে দরকার ১৭২টি আসন। সেক্ষেত্রে নির্বাচন হওয়া আসনগুলোর মধ্যে প্রায় ১৫০ আসনের কাছাকাছি জিততে হয়। তাই দেশটির এবারের নির্বাচনে কোনো দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ।
এদিকে, ফলাফল ঘোষণায় দেরি হওয়ার জন্য মোবাইল ফোন পরিষেবা বন্ধ করাকে দায়ী করেছে দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ অবস্থায় ভোটের ফলাফলে কারচুপির অভিযোগ তুলেছে পিটিআই। ফলাফল ঘোষণায় দেরি হওয়াকে নজিরবিহীন বলে আখ্যা দিয়েছেন দলটির মুখপাত্র রউফ হাসান।
বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ শেষে পিটিআই বলেছিল, তারা ১৫০টি আসনে এগিয়ে আছে। তবে প্রাপ্ত ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, তারা এগিয়ে থাকলেও তা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার মতো নয়।
যদিও ভোটে বেশ চমক দেখিয়েছে দলটি। আগে থেকে বিশ্লেষকরা বলছিলেন, পিটিআইয়ের ভরাডুবি হতে পারে। আর সহজে ক্ষমতায় আসতে পারে পিএমএল-এন। কিন্তু ভোটের শেষে দেখা গেলো উল্টো। লড়াই হচ্ছে হাড্ডাহাড্ডি।
কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে সেক্ষেত্রে জোট সরকার গঠিত হবে। এক্ষেত্রে পিটিআই অন্যদের সঙ্গে জোট গঠন করতে পারে। আবার পিএমএল-এন, পিপিপি ও অন্যান্য দলগুলো জোট গঠন করেও ক্ষমতায় আসতে পারে।
পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গহর আলী খান আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা ১৫০টির বেশি আসন পাবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বা বিলাওয়াল ভুট্টোর দলের সঙ্গে তারা জোট করবেন না বলে জানিয়েছেন। তিনি এ-ও বলেছেন, পিএমএল–এন ও পিপিপির সঙ্গে আমরা কোনো যোগাযোগ রাখছি না।
প্রসঙ্গত, এ নির্বাচনে ইমরান খানের দল সরাসরি অংশ নিতে পারেনি। দলটির সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। কারাদণ্ডিত হয়ে ইমরান খানও কারাগারে রয়েছেন। তাই তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারেননি। তবে, জেল থেকে তিনি ভোট দিয়েছেন।
/এমএন
Leave a reply