কুড়িগ্রাম করেসপনডেন্ট:
কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যার অভিযোগে কুড়িগ্রামে সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজভী কবির চৌধুরী বিন্দু ও কুড়িগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ঝিনুক আহমেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একই অভিযোগে বিন্দুকে স্থায়ীভাবে দল থেকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) নিহতের স্ত্রী রোজিনা পারভীন ৪ জনকে আসামি করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান।
এ মামলায় গ্রেফতারকৃত মো. রেজভী কবির চৌধুরী বিন্দু ও মো. ঝিনুক আহমেদ ছাড়াও বাকি দুই অভিযুক্ত হলেন ছাত্রলীগ কর্মী সৌরভ ও স্বাধীন আহমেদ।
এর আগে, গতকাল (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহরের খলিলগঞ্জ বাজার এলাকায় হত্যার এ ঘটনা ঘটে। নিহত শরিফুল ইসলাম সোহান (৪০) হাটিরপাড় এলাকার মৃত আমজাদ হোসেন বুলুর ছেলে। তিনি কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ছিলেন।
নিহত সোহানের বন্ধু খন্দকার রেদোয়ান মাহমুদ বলেন, সোহানসহ আমরা তিন বন্ধু শহরের অভিনন্দন কনভেনশন সেন্টারের সামনে দাড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাদের গাড়ির সামনে এসে ছিটকে পরে। এতে দুই মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে শহরের দিকে আসার সময় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিন্দু তার দলবলসহ আমাদের গাড়ির পথরোধ করে। এ সময় কিছু বুঝে উঠার আগেই তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে সোহান গুরুতর আহত হয়।
তিনি আরও জানান, পরে বিন্দু নিজেই সোহানকে হাসাপাতাল নিয়ে যায়। পরে হাসপাতালের সামনে আসলে আবারও সোহানকে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে হাসাপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রেজভী কবীর বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার মোটরসাইকেলের সাথে সোহান ভাইয়ের গাড়ির ধাক্কা লাগে। এ সময় তাকে গাড়ি থেকে নামতে বলা হয়, তখন হঠাৎ সে হার্ট অ্যাটাক করে। পরে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ সময় তাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ দেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, গতকাল রাতেই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের উপ-দফতর সম্পাদক বারেক হোসাইন আপন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে অভিযুক্ত রেজভীকে বহিষ্কারাদেশ দেয়া হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও মর্যাদা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে রেজভীর কবির চৌধুরী বিন্দুকে (সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, সদর উপজেলা, কুড়িগ্রাম) বাংলাদেশ ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হলো।
আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম সোহানের মৃত্যু নিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগ। যেখানে, হত্যার ঘটনার কারণ উদঘাটন করে জড়িতদের শাস্তির দাবি ও শোকবার্তা জানানো হয়।
বহিষ্কারের বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। শৃঙ্খলা ও মর্যাদা পরিপন্থী কাজ যেই করুক তাদের ঠাঁই ছাত্রলীগে নেই।
আরএইচ/এমএইচ
Leave a reply