দুদিন বাদে বসন্তের দখলে থাকবে প্রকৃতির সুন্দরেরা। আমাদের মনে লাগবে বসন্তের রঙ। রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা পা দিয়েছে এগারোতম দিনে। যমুনা অনলাইনের বিশেষ আয়োজন ‘বাংলার বইমেলা’ থেকে আজ স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদের মুখোমুখি হয়েছেন ফারহানা ন্যান্সি।
যমুনা অনলাইন: মানুষের জ্ঞানের পরিধিকে বাড়ানোর উপলক্ষ্য হয় বইমেলা। সেক্ষেত্রে গল্প-উপন্যাসের পাশাপাশি রাজনীতি, অর্থনীতি, ইতিহাস ইত্যাদি বিষয়ের ওপর লেখা প্রবন্ধের বই মেলায় প্রকাশিত হয়। পাঠক কেনে। আপনি স্থানীয় সরকার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী? আপনার হাতের বইগুলো নিয়েও জানতে চাই।
তোফায়েল আহমেদ: এগুলো নিয়ে প্রচুর বই আছে মেলায়। মুশকিল হচ্ছে যে, বইমেলায় তরুণরা বেশি আসে। তারা ফিকশন বেশি পড়লেও এসব বইয়ের (প্রবন্ধ) আকর্ষণ তাদের কাছে কম। পাবলিকেশনের দিক থেকে দেখলে এসব বই অনেক আছে। এবারের মেলায় আমার নিজের চারটি বই আছে। হাতে আছে দুটি বই– একটি ‘তিন দশকের নীতিচিন্তা’। অন্যটি ইংরেজিতে লেখা একটি বই। এটিতে আছে রাজনীতি, নেতৃত্ব নিয়ে অনেক বিষয় আশয়।
যমুনা অনলাইন: আপনি সম্প্রতি কলকাতা বইমেলা থেকে ঘুরে এসেছেন। জানতে চাই, আমাদের অমর একুশে বইমেলা আর কলকাতা বইমেলার মধ্যে কী পার্থক্য খুঁজে পেলেন?
তোফায়েল আহমেদ: আমি একজন দর্শক হিসেবে দেখেছি, কলকাতার বইমেলা বেশ ছিমছাম, সাজানো। এখানেও তাই। তবে আমাদের বইমেলায় বেশিরভাগ পাঠক তরুণ, মেলায় তরুণদের আধিক্য বেশি। কলকাতা বইমেলায় তরুণদের পাশপাশি বয়স্করাও আসে। এটাই পার্থক্য।
যমুনা অনলাইন: আমরা এগারো দিন পার করেছি বইমেলার। এখানে দেখা যাচ্ছে ‘পাঠক’ ও ‘দর্শনার্থী’ আসেন। সবাইকে পাঠকের ক্যাটাগরিতে ফেলা যাচ্ছে না। অনেকেই আসেন বইমেলা দেখতে, ছবি তুলতে। সেটাও অবশ্য আশার কথা। আপনার বক্তব্য?
তোফায়েল আহমেদ: তারা এখন আসছেন, ঘুরছেন। একটা সময়ে হয়তো বই কিনবেন, পড়বেন। এটা ভালো দিক। কারণ, ‘বইমেলা’য় তো আসছেন। অন্য কোনো মেলায় তো যাননি! তবে পাঠাভ্যাস গড়ে তোলার জন্য অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোরও একটা দায়িত্ব আছে। ছোটদের বইয়ের কর্নার আছে, যাতে শিশুরা পাঠের প্রতি অভ্যস্ত হয়। তবে একটা কথা আমি বলব– বইমেলাতে হাজারের ওপর বই প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু বইগুলোর গুণগত মান নিশ্চিতের ক্ষেত্রে প্রকাশকেরও একটা মুখ্য দায়িত্ব থাকে।
যমুনা অনলাইন: গুণগত মান নিশ্চিতের ক্ষেত্রে ঘাটতি কোথায়?
তোফায়েল আহমেদ: আমাদের প্রকাশকদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রয়েছে। অনেক লেখক এই অভিযোগ করেন– প্রকাশকরা মেলায় আসেন। বিক্রি করেন। কিন্তু লেখকদের কাছে তারা সঠিক তথ্য দেন না। বইটার এডিশনে কত কপি ছেপেছে, কত কপি বিক্রি হয়েছে, এসব ব্যাপারে তারা সঠিক তথ্য দেন না। এবং লেখকদের পারিশ্রমিক দেয়ার ক্ষেত্রেও গড়িমসির অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে। এটাও একটা বড় কারণ আমাদের দেশে ভালো বই প্রকাশিত না হওয়ার। আর লেখকরাও তো মানুষ, তাদেরও তো খেয়ে পরে বাঁচতে হয়। কষ্ট করে লেখার পর তার তো কিছু পেতে হবে। এটা তো কোনো ‘ফিলানথ্রপি’ না।
এখানে একটা বড় খাটতি রয়েছে বলে আমি মনে করি। এটা মনিটরিং করার কোনো অথরিটি দেশে আছে কিনা, আমি জানি না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লেখকের সঙ্গে প্রকাশনী কোনো চুক্তিই করে না। এই অবস্থা থেকে মুক্তির দরকার। প্রকাশনীকে একটা শিল্প হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
যমুনা অনলাইন: আপনি আমাদেরকে আপনার মূল্যবান সময় দিয়েছেন। অনেক ধন্যবাদ।
তোফায়েল আহমেদ: যমুনা অনলাইনকেও ধন্যবাদ জানাই।
/এএম
Leave a reply