বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএলে) চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৭৩ রানে হারিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আগে ব্যাট করতে নেমে উইল জ্যাকসের ঝড়ো সেঞ্চুরি এবং লিটন দাস ও মঈন আলীর জোড়া ফিফটিতে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রানের পাহাড় গড়েছে কুমিল্লা। যা এবারের বিপিএলে ইনিংসের সর্বোচ্চ সংগ্রহ, আর বিপিএল ইতিহাসের হিসাবে যৌথভাবে সর্বোচ্চ। লক্ষ্য তাড়ায় রিশাদ হোসেন ও মঈন আলীর ঘূর্ণিতে ২১ বল বাকি থাকতেই ১৬৬ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম। বল হাতে হ্যাটট্রিক করেন মঈন। এই ম্যাচে মোট ছক্কা হয়েছে ২৯টি, কুমিল্লার ব্যাটাররা ছক্কা মেরেছে ১৬টি আর চট্টগ্রামের ব্যাটাররা ছক্কা মারেন ১৩টি।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের সাগরিকা স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের অধিনায়ক শুভাগত হোম। আগে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। অধিনায়ক লিটন দাস পাওয়ারপ্লে’তে রীতিমতো তাণ্ডব চালান চট্টগ্রামের বোলিং লাইনের ওপর। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারেই কুমিল্লার স্কোরবোর্ডে আসে ৬২ রান। যা এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ২৬ বলে পঞ্চাশ পূর্ণ করা লিটন হাঁকিয়েছেন ৭ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কা। ৫০ রানের মধ্যে ৪৬ রানই বাউন্ডারি থেকে পান লিটন। বাউন্ডারি বিহীন ১৬ বলে লিটন করেছেন কেবল ৪ রান।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে লিটন-জ্যাকস জুটির রান যখন ৮৬ তখনই চট্টগ্রামকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেকথ্রু এনে শহিদুল ইসলাম। শুধু লিটনকে ফিরিয়েই ক্ষান্ত হননি শহিদুল, পরের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তাওহিদ হৃদয়কে। ব্যাক টু ব্যাক উইকেট খুইয়ে চাপে পড়ে যায় কুমিল্লা। লিটন প্যাভিলিয়নে যান ব্যক্তিগত ৬০ রানে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হৃদয় আজ পেয়েছেন গোল্ডেন ডাকের স্বাদ।
ব্রুক ডেভিড গেস্ট এদিন ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন। ১১ বল খেলা ব্রুক ১০ রানের বেশি করতে পারেননি। আগের দিন বাংলাদেশে এসে আজ ম্যাচ খেলতে নামা মঈন আলি শুরু থেকেই হয়ে ওঠেন মারমুখী। এর মাঝেই টিকে থাকা উইল জ্যাকস স্ট্রোক্সের ফোয়ারা ছুটিয়ে ৩১ বলে পেয়েছেন বিপিএল ইতিহাসে নিজের প্রথম ফিফটির দেখা। সেঞ্চুরি হাঁকাতে উইল জ্যাকসের লাগে মোট ৫০ বল। অর্থাৎ পরের ফিফটি করতে উইল জ্যাকস খরচ করেন কেবল ১৯ বল।
মঈন আলি ২৩ বলে ফিফটি হাঁকিয়ে অপরাজিত থাকেন, এটিই ছিল এবারের বিপিএলে মঈনের প্রথম ম্যাচ। বিপিএলে নিজের তৃতীয় ম্যাচে নামা উইল জ্যাকস ৫৩ বলে নামের পাশে ১০৮ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন। তার এই ইনিংসে ছিল ১০ ছক্কা ও ৫ চার। শেষ পর্যন্ত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ইনিংস থামে ৩ উইকেটে ২৩৯ রানে। যা যৌথভাবে বিপিএলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এর আগে ২০১৯ সালের আসরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে এই মাঠেই সমান ২৩৯ রান করেছিল রংপুর রাইডার্স।
বড় রান তাড়ায় নেমে শুরুটা ভালো করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। তাদের ব্যাটারদের ক্যাচও ছাড়েন কুমিল্লার ফিল্ডাররা। তানজিদ হাসানের ক্যাচ একসঙ্গে ধরতে গিয়ে মিস করেন লিটন ও ম্যাথু ফোর্ড। পরে এই ওপেনার আউট হন মোস্তাফিজুর রহমানের বলে। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার কিছুক্ষণ পর ফেরেন আরেক ওপেনারও।
৩ চার ও ২ ছক্কায় ২৩ বলে ৩৬ রান আসে জশ ব্রাউনের ব্যাট থেকে। দুই উদ্বোধনী ব্যাটার নামার পর রীতিমতো ধ্বস নামে চট্টগ্রামের ব্যাটিংয়ে। মাঝে কেবল ১ চার ও ৫ ছক্কায় ১১ বলে ৩৬ রান করেন সৈকত আলী। কুমিল্লার পক্ষে ৪ ওভারে স্রেফ ২২ রান দিয়ে চার উইকেট নন রিশাদ হোসেন। হ্যাটট্রিক করা মঈনের শিকারও চারটি উইকেট। ৮ ম্যাচে ছয় জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে আছে কুমিল্লা, ৯ ম্যাচে ৫ জয় নিয়ে পরের অবস্থান চট্টগ্রামের।
/আরআইএম
Leave a reply