বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশালকে ১ উইকেটে হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্স। চলতি আসরের প্রথম দেখায় রংপুরকে হারিয়েছিল বরিশাল। আগে ব্যাট করতে নেমে কাইল মায়ার্সের ঝড়ো ৪৬ রানের সাথে তামিম ইকবালের ৩৩ রানের ইনিংসে বড় সংগ্রহের পথে ছিল দক্ষিণের দলটি। তবে আবু হায়দার রনির ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫১ রানে থামে বরিশাল। লক্ষ্য তাড়ায় ব্রেন্ডন কিং ও সাকিব আল হাসানের ঝড়ো ইনিংসে ৩ বল হাতে রেখেই ১ উইকেটের জয় তুলে নেয় রংপুর। এই জয়ের ফলে প্রথম দল হিসেবে কোয়ালিফায়ার রাউন্ড নিশ্চিত করলো রংপুর।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন তামিম ইকবাল। ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের ব্যাটে ভালো শুরু পায় বরিশাল। তামিম ২০ বলে ৩ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ৩৩ রান করে আউট হলে ভাঙে ৩৮ রানের জুটি। আরেক ওপেনার টম ব্যান্টন পারেননি তেমন কিছুই করতে। রংপুরের বোলারদের সামনে বেশ ভুগেছেন তিনি।
তবে তিনে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন কাইল মেয়ার্স। গত ম্যাচেও দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন তিনি। এদিন রংপুরের বোলারদের উপর শুরু থেকেই চড়াও হয়ে খেলেছেন মেয়ার্স। তবে এদিনও ভাগ্য সহায় হয়নি তার। ২৭ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ৩ ছক্কায় ৪৬ রান।
বরিশালের উপর দিয়ে বোলিং তান্ডবটা চালিয়েছেন মূলত রনি। বাঁহাতি এ পেসারের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, কাইল মেয়ার্স, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন রনি। হাসান মাহমুদ ২ উইকেট নিতে খরচ করেছেন ৩১ রান।
১৫২ রান তাড়ায় ব্রেন্ডন কিংয়ের ব্যাটে দারুণ শুরু করে রংপুর। প্রথম দুই ওভারে রংপুরকে ২১ রান এনে দেন তিনি। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে গিয়ে নিজেদের প্রথম উইকেট হারায় তারা। কাইল মায়ার্সের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে এজ হয়ে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়েছেন মুমিনুল হক।
লম্বা সময় পর বিপিএলে ফেরা বাঁহাতি এই ব্যাটার এদিন রানের খাতাই খুলতে পারেননি। মুমিনুল ফিরলেও থামানো যায়নি রংপুরের রানের গতি। কিংয়ের সঙ্গে বরিশালের বোলারদের ওপর রীতিমতো তাণ্ডব চালাতে থাকেন সাকিব আল হাসান। পাওয়ারপ্লে শেষ হওয়ার আগের বলে কিংকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ডানহাতি এই অফ স্পিনারের বলে স্টাম্পিং হয়েছেন ২২ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলা কিং।
এক ওভার বাদে সাকিবকেও ফিরিয়েছেন মিরাজ। দারুণ ছন্দে থাকা সাকিব লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে প্রীতম কুমারের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। ঝড় তোলা সাকিব ফিরেছেন ১৫ বলে ২৯ রান করে। সেই সময় নুরুল হাসান সোহানকে ফিরিয়ে রংপুরকে চেপে ধরে বরিশাল। চাপটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন মিরাজ। ছন্দে থাকা শেখ মাহেদীকে আউট করেছেন তিনি।
হঠাৎ ছন্দপতনে ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে রংপুর। শুরুতে জিমি নিশামের উইকেটও তুলে নিতে পারতো বরিশাল। কিন্তু মিরাজের বলে ক্যাচ নিতে পারেননি প্রীতম। দলের ১২ ওভারের মাঝেই নিজের ৪ ওভার শেষ করেন মিরাজ। যেখানে ২৪ রান দিয়ে ডানহাতি এই অফ স্পিনার নিয়েছেন ৩ উইকেট। বিপর্যয় সামাল দেয়া টম মুরস আউট হয়েছেন ১৭ বরে ১৭ রান করে, ওবেদ ম্যাককয়ের বলে।
দারুণ ব্যাটিং করা নিশামকে ফেরালেও সেটা অনেকটা দেরি হয়ে যায়। ম্যাককয়ের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে মুশফিককে ক্যাচ দিয়েছেন। নিশাম সাজঘরে ফেরেন ১৭ বলে ২৮ রানের ইনিংস খেলে। ১৩ রান করা প্রিটোরিয়াসকে ফেরালে লড়াই জমে ওঠে। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে এক রান নিয়ে স্কোর লেভেল করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। এমন সময় সুপার ওভারের আশা জাগলেও চার মেরে রংপুরকে জেতান হাসান।
/আরআইএম
Leave a reply