নূরনবী সরকার, চট্টগ্রাম থেকে:
গ্রীষ্মে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে বড় চ্যালেঞ্জ জ্বালানি। ডলার সঙ্কট আর অস্থিতিশীল বাজারের কারণে এলএনজি আমদানি কঠিন হয়ে পড়তে পারে। এ অবস্থায় কয়লাই ভরসা। বৈশ্বিক বাজার স্থিতিশীল থাকায় এক্ষেত্রে আপাতত সঙ্কট নেই।
এবারের গরমে বিদ্যুতের চাহিদা ১৭ হাজার মেগাওয়াট। যদি জ্বালানির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে এবং যান্ত্রিক গোলোযোগ না হয়, তাহলে দেশে প্রতিদিন ২৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। এরমধ্যে ৬ হাজার মেগাওয়াট পাওয়া যেতে পারে চারটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে।
এই চারটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে চট্টগ্রামের বাঁশখালীর বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রটি একটি। দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান ও এস আলম গ্রুপের বিনিয়োগে ২৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এটি। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। তবে এই কেন্দ্র থেকে আপাতত দৈনিক ৪৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। যার ইউনিট প্রতি গড় মূল্য ১১ টাকার বেশি।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সম্পর্কে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট-১ এর পরিচালক আলমগীর কবির বলেন, এই পাওয়ার প্লান্টে দূষণের মাত্রা অনেক কম। এক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংক ও পরিবেশ অধিদফতরের গাইডলাইন অনুসরণ করা হয়।
এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট-১ এর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবাদত হোসেন ভুঁইয়া বলেন, এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রায় ১২ টাকার কাছাকাছি খরচ হয়। এরপরও এটি সবথেকে সর্বনিম্ন খরচ। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকেও এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ কম।
যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন জনবান্ধব নয়। আর বিদ্যুৎ উঃপাদন কেন্দ্রের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলার সঙ্কট কাটানো ও সরকার যদি নিয়মিত বিল পরিশোধ করে তবে উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখা সম্ভব।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামছুল আলম বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতার আংশিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে বিদ্যুতের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া, ডলার সঙ্কটের কারণে আমদানি ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ব্যয় সংযোজন করে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো মুনাফা বৃদ্ধি করছে।
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে পরিবেশগত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সরকারকে আরও গুরুত্ব দেয়ার আহ্বান এই বিশ্লেষকের।
/আরএইচ/এমএন
Leave a reply