পাবনা করেসপনডেন্ট:
দিনমজুর বাবার অভাবী সংসারের হাল ধরতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরি নিয়েছিলেন সাগর হোসেন। ক’দিন পরেই বেতন তুলে বাড়ি আসার কথা মাকে ফোনে জানিয়েছিল সাগর। সেই আসা আর হলো না। তার আগেই রাজধানীর বেইলি রোডে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড কেড়ে নিলো তার প্রাণ।
নিহত সাগর হোসেন পাবনার ফরিদপুর উপজেলার হাদল ইউনিয়নের ধানুয়াঘাটা পূর্বপাড়া গ্রামের হাসান আলী ও সাবিনা খাতুন দম্পতির ছেলে। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাগর সবার বড়। এ বছর এইচএসসি পাশ করেছেন তিনি। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি গারদা শিলড সিকিউরিটি কোম্পানীর মাধ্যমে সিকিউরিটি গার্ড হিসেবে ক্লথিং ব্র্যান্ড ইপিলিয়ন শোরুমে জয়েন করেছিলেন সাগর। সেখানে কর্মরত অবস্থায়ই আগুনে আটকা পড়ে তার মৃত্যু হয়।
সাগরের বাবা হাসান আলী বলেন, চার মাস আগে ঢাকায় গিয়ে সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করে সে। মাঝে মধ্যে কিছু টাকা পাঠাতো। তা দিয়েই চলছিল সংসার। বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত একটার দিকে শুনতে পাই আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।
ছেলের মৃত্যুতে দিশেহারা সাগরের মা সাবিনা খাতুন বলেন, দুদিন আগে ছেলের সাথে মোবাইলে কথা হয়েছিল। বেতন তুলে ১০ তারিখে বাড়ি আসার কথা ছিলো সাগরের।
এ বিষয়ে হাদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন জানান, তিনি ও উপজেলা পরিষদ মিলে পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবেন। রাতের মধ্যে সাগরের মরদেহ গ্রামে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি বহুতল ভবনে আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। ধীরে ধীরে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এক ঘণ্টার বেশি চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে উদ্ধার কাজে যোগ দেয় বিজিবিও।
এ ঘটনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৬ জনে। শুক্রবার সকাল ১১টা পর্যন্ত পাওয়া সবশেষ তথ্যে ৩৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। শনাক্তের পাশাপাশি, স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয় রাতেই। নিহতদের বেশিরভাগই শ্বাসনালী পুড়ে মারা গেছেন বলে জানানো হয়েছে।
/এএস
Leave a reply