বেইলি রোডে আগুন: বেঁচে ফেরার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন এক চিকিৎসক

|

রাজধানীর বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন বেঁচে ফেরা এইচ এম কামরুজ্জামান নামে এক চিকিৎসক। শুক্রবার (১ মার্চ) গণমাধ্যমের সাথে কথা বলে ওই মুহূর্তের কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, রাত ১০টার দিকে ভবনটির নয় তলা থেকে তিনি খাবার নিয়ে বিল দিতে যাচ্ছিলেন। এসময় দেখেন কিছু লোকজন দৌড়াদৌড়ি করছেন। পরে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা বলেন যে ভবনে আগুন লেগেছে।

এসময় তিনি সবাইকে শান্ত হওয়ার পরামর্শ দেন এবং যেসব অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা ছিলো সেসব নিজেদের কাছে রাখাতে বলেন। পরে এসব নিয়ে নিচে যাওয়ার চেষ্টা করেন তিনি ও সাথে থাকা কয়েকজন। তবে প্রচণ্ড ধোঁয়া ও আগুনের জন্য কিছুই করা যাচ্ছিলো না। তাড়াতাড়ি দরজা বন্ধ করে ভেতরে চলে আসেন তারা। এর কিছুক্ষণ পরেই ধোঁয়ায় পুরো ৯ তলা কালো হয়ে যায়। সবার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল।

একপর্যায়ে, তারা ওই জায়গায় ব্যবহৃত লোহার জিনিসপত্র নিয়ে ভবনের পিছনের দিকে থাকা গ্লাসগুলো ভেঙে ফেলেন। ভবনটির পাশেই ডিশের তার ছিলো। একজন খুব কান্নাকাটি করায় হাতে রুমাল পেঁচিয়ে তাকে ওই তার দিয়ে নিচে নামানোর ব্যবস্থা করা হয়। ওই একজনকে নামানোর পর সবার পরামর্শে হাতে রুমাল পেঁচিয়ে নামা শুরু করেন তিনি। এসময় তার ডান হাতের মাংস ছিঁড়ে যায়। ৫ তলা পর্যন্ত এসে একটি এসির বক্সে দাড়ান। পাশে থাকা একটি বারান্দার সাপোর্ট নিয়ে আস্তে আস্তে একটি টিনের চালে আসেন।

টিনের চালে আসার পর দেখেন একজন ওখানে পড়ে আছেন। তাকে টেনে তোলার অনেক চেষ্টা করছিলেন। তবে হাতে ব্যথা পাওয়ায় ঠিকমতো তুলতে পারছিলেন না। এসময় নিচে থাকা লোকজনকে ওই লোকের কথা বলে ফায়ার সার্ভিসের মই দিয়ে নিচে নেমে আসেন। নেমেই উপরে থাকা মানুষদের অবস্থা সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিসকে অবহিত করেন। পানি খেয়ে তার আঘাতপ্রাপ্ত হাতে বরফ দেন ওই চিকিৎসক।

এসময় নিজের মনের অবস্থা সম্পর্কে তিনি জানান, মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন। নামার সময় পর্যন্ত যত দোয়া দরুদ মনে ছিলো সব পড়ছিলেন। নিজে বেঁচে সবাইকে নিয়ে কিভাবে নিচে আসা যায় সে চেষ্টাই করছিলেন তিনি।

/এএস


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply