সিনিয়র করেসপনডেন্ট, নাটোর:
নাটোরে নিখোঁজের দু’বছর পর এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ভাষ্য, পরকীয়ার জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
রোববার (৩ মার্চ) দুপুরে গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় পুরানপাড়া এলাকায় মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় মাফিজুলের দেহাবশেষ উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
নিহত মাফিজুল নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খলিফাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। দুই বছর আগে নিখোঁজ হন তিনি। পরে তার মা ২০২২ সালের ৭ মে গুরুদাসপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। তার পরিবার মনে করেছিল, অভিমানে ঘর ছেড়েছেন মফিজুল। একদিন না একদিন সে ফিরে আসবে। কিন্তু নিখোঁজের দু’বছর পর মিললো মরদেহ।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম জানান, একই ফ্যাক্টরিতে কাজের সুবাদে এক সন্তানের জনক মাফিজুলের সাথে একই এলাকার গৃহবধু তানজিলা খাতুনের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর ফলে তানজিলা ও তার স্বামী আল হাবিবের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। পরে তানজিলার বাবাকে বিষয়টি জানান হাবিব। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল তানজিলার বাবা কৌশলে মাফিজুলকে চাঁচকৈড় বালিকা দাখিল মাদরাসার ভেতরে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তানজিলার বাবা আবু তাহের ও তার স্বামী আল হাবিবসহ কয়েকজন মিলে মাফিজুলকে হত্যা করে। হত্যার পর একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে মাফিজুলের মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।
মাইনুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের পর তানজিলা ও তার স্বামীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ আরও বেড়ে যায়। একপর্যায়ে ২০২২ সালের মে মাসে স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও নারী নির্যাতনের মামলা করে তানজিলা। সেই মামলায় নাটোর কারাগারে যাওয়ার পর তার স্বামীর সাথে খলিফাপাড়া এলাকার জাকির মুন্সি নামের একজনের বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে তানজিলার স্বামী হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি জাকির মুন্সিকে বলে। পরে জাকির জামিনে মুক্তি পেয়ে নিহত মাফিজুলের পরিবারের কাছে ঘটনাটি খুলে বলে।
মাইনুল ইসলাম আরও জানান, এ ঘটনা জানার পর গত শুক্রবার রাতে নিহত মাফিজুলের মা মাইনুর বেগম বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ ও র্যাব অভিযান চালিয়ে তানজিলা, তার বাবা আবু তাহের খলিফা, তানজিলার স্বামী আল হাবিব সরকার ও প্রতিবেশী আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যে মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় মাফিজুলের শরীরের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।
/আরএইচ
Leave a reply