আদর্শ ভবনে কয়টি রেস্টুরেন্ট থাকতে পারে, যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

|

সম্প্রতি আগুন লাগা বেইলি রোডের গ্রিন কজি কটেজ। বাঁয়ে পুরনো ছবি, ডানে আগুনে পোড়া ভবন

তাজনুর ইসলাম:

বেইলি রোডে দুর্ঘটনার পর থেকে আলোচনায় ভবনের নিরাপত্তা। আবাসিক বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ে কিছুটা আলাদা রেস্টুরেন্ট। সেজন্যই বেশি কথা হচ্ছে রেস্টুরেন্টের নিরাপত্তা নিয়ে। একটি আদর্শ ভবনে কয়টি রেস্টুরেন্ট থাকতে পারে কিংবা ভবনে থাকা রেস্টুরেন্ট কতটা নিরাপদ তা বুঝবে মানুষ কীভাবে বুঝবে তা নিয়ে আলোচনা জনে জনে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুর্ঘটনা মোকাবিলার সব আধুনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে একটি ভবনে সর্বোচ্চ দু’টি রেস্টুরেন্ট স্থাপন করা যায়। তবে কে মানছেন সেই নিয়ম? নিয়ম না মানার প্রবণতা খোদ রাজধানীতেই রয়েছে শত শত। নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, ইচ্ছে থাকলেই নিয়ম মানা সম্ভব। সেক্ষেত্রে, সরকারি সংস্থাগুলোকেও তৎপর হতে হবে।

সাধারণ জনগণ বলছে, নিরাপত্তার বিষয়টি প্রশাসন বা সরকারের দেখা উচিত। সাধারণ মানুষের পক্ষে এসব খুঁজে বের করা বেশ কঠিন। এ বিষেয়ে একজন বলেন, আমরা তো পরিবার-পরিজন নিয়ে আনন্দের জন্য কিংবা ভোজনের জন্য যাই। সেজন্য এসব বিষয়ে প্রশাসনের নজর থাকা উচিত। কোথায় কী ঘাটতি, কীভাবে কী করতে হবে এটি তাদেরকেই দেখতে হবে। সাধারণ মানুষের পক্ষে এতকিছু বোঝা সম্ভব নয়।

নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, রেস্টুরেন্ট যদি হয় তাহলে স্বয়ংক্রিয় পানির মাধ্যমে আগুন নেভানোর ব্যবস্থা থাকতে হয়। পাশাপাশি গ্যাস নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকতে হয়। কোনো কারণে গ্যাসের লাইনে লিকেজ থাকলে কিংবা অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটলে যাতে পুরোপুরি গ্যাসের সঞ্চালন ব্ন্ধ করা যায়। এরপর পুরো ভবনে ফায়ার এলার্ম সিস্টেম থাকতে হয়। এগুলো না করে কোনো রেস্টুরেন্টই করা যাবে না।

তার মতে, ভবনের নকশা করার সময়ই ঠিক করতে হবে, কত মানুষের উপস্থিতি হবে। প্রতি ৫০০ জনের জন্য থাকতে হবে- একটি প্রশস্ত সিঁড়ি। কোনো ভবনে দু’টির বেশি রেস্টুরেন্ট থাকলে তার অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা বেশ জটিল ও কঠিন। নিয়ম মানার প্রবণতা বাড়াতে সরকারি সংস্থাগুলোর সমন্বয় ও কঠোর প্রশাসনিক নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শও দেন এই নগর পরিকল্পনাবিদ।

ইকবাল হাবিব বলেন, দুর্ঘটনা বন্ধ করার সাধ্য কারো নেই। কিন্তু ‍দুর্ঘটনায় যেন মৃত্যু না ঘটে সে ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। অর্থাৎ মানুষ যেন সহজে প্রস্থান করতে পারে, সতর্ক হতে পারে এবং আগুন নেভানোর ব্যবস্থা করতে পারে। সেই আইনগুলো করা আছে, এগুলো প্রতিপালনের জন্য বেতনভুক্ত অসংখ্য কর্মী রয়েছে। জনগণ তাদেরকে ট্যাক্সের টাকায় পালন করছে। এরপর যদি এখন এগুলোর বাস্তবায়ন না হয় তাহলে তো মেনে নেয়া যাবে না।

এসময় অগ্নি-দুর্ঘটনা মোকাবেলায় সাধারণ মানুষকে সচেতন ও প্রশিক্ষিত হওয়ার পরামর্শও দেন স্থপতি ইকবাল হাবিব।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply