জলদস্যুদের কবলে জাহাজ: আতঙ্ক-দুঃশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে নাবিকদের পরিবারে

|

চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের ছবি নিয়ে তার অপেক্ষায় মা ও তিন শিশুকন্যা

জামসেদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম:

নির্ঘুম রাত কাটছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিকের পরিবারের। দু’দিন ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম উৎকণ্ঠায় স্বজনরা। কী ঘটছে জিম্মি নাবিকদের ভাগ্যে এ নিয়ে দুঃশ্চিন্তার শেষ নেই। অনেকের পরিবারে খাওয়া-দাওয়া বন্ধও হয়ে গেছে।

জাহাজে জলদস্যুদের হানা দেয়ার একটি ভিডিওর দৃশ্য দেখার পর থেকেই উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের পরিবার। এরপর থেকেই ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে কাঁদছেন তার মা। এই নাবিকের গর্ভবতী স্ত্রীও অসুস্থ। স্বামী চিন্তায় কান্না যেন থামছেই না তার। কিছুক্ষণ পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন আতিকুল্লাহর স্ত্রী। তার ছোট ছোট ৩ মেয়েও বাবার চিন্তায় ছেড়েছেন খাওয়া-দাওয়া।

আতিকুল্লাহ খানের মা বলেন, পরিবারে এখন শুধুই হাহাকার। আমাদের কান্না ছাড়া আর কিছুই নেই। রমজানে খাওয়াদাওয়া করতে পারছি না। রাতে ঘুমাতে পারছি না। এ দুশ্চিন্তা আর নিতে পারছি না। ছেলের স্ত্রী একটু পর পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলছে। আল্লাহর কাছে একটা প্রার্থনা ছেলেকে নিরাপদে যেন ফিরে পাই।

আতিকুল্লাহ খানের ভাই বলেন, আমাদের প্রতিটি মুহূর্ত যাচ্ছে খুবই কষ্টের মধ্যে। কারও চোখে ঘুম নেই। মা, ভাবী সবাই সারাদিন কান্না করছে। এমন দুর্দিন আসবে সেটি আমরা কখনই কল্পনাও করিনি।

জলদস্যুদের কবলে পড়া জাহাজটির ২৩ নাবিকের মধ্যে ১১ জনের বাড়িই চট্টগ্রামে। নাবিকদের মোবাইল কেড়ে নেয়ায় গত মঙ্গলবার রাতের পর আর যোগাযোগ হয়নি পরিবারের সাথে। কী ঘটছে জিম্মি নাবিকদের ভাগ্যে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় স্বজনরা।

জাহাজে থাকা এক নাবিকের স্বজন বলেন, আমাদের কাছে এখনও একেকটি মুহূর্ত একেকটি বছরের মতো। সরকারের কাছে একটিই দাবি দ্রুতই তাদেরকে জীবিত উদ্ধার করা হোক।

আরেকজনের ভাই বলেন, শেষবার যখন কথা হয়, তখন সে বলেছিল আর হয়তো যোগাযোগ হবে না। তারা (জলদস্যুরা) আমাদের মোবাইল কেড়ে নিচ্ছে। এরপর থেকে আর যোগাযোগ হয়নি ওর সাথে।

উল্লেখ্য, মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে ভারত মহাসাগর হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দরে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply