নির্বাচন আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোট কী কাকতালীয়?

|

নির্বাচনের সাথে কী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসুস্থতার কোনো ঐশ্বরিক যোগসূত্র রয়েছে? দেখা যায় গত ৩টি বড় নির্বাচনের সময়েই শারীরিক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন তিনি। সামনে দেশটির জাতীয় নির্বাচন। রাজ্যের বাইরে আসাম ও মেঘালয়েও প্রার্থী দিতে চেয়েছে তার দল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। তার দলের নেতাকর্মীরাসহ মমতার অসুস্থতায় চিন্তিত দেশটির জাতীয় স্তরের রাজনীতিবীদরাও।

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজ নির্বাচনী এলাকা নন্দীগ্রামে ভোটের প্রচারণায় গিয়ে আহত হন মমতা। সেই সময়, গাড়ীর দরজার আঘাতে পায়ে চোট পান তিনি। আঘাত এতটাই গুরুতর হয়েছিল যে, পায়ে প্লাস্টার করতে হয়েছিল তার। ভাঙা সেই পা নিয়েই নির্বাচনে তার দল চমক দেখিয়েছিল। সেবার তৃণমূলের শ্লোগান ছিল, ভাঙা পায়ে খেলা হবে। মমতার দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও, নিজ আসনে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে হেরে যান তিনি। যদিও উপ-নির্বাচনে জিতে বিধানসভায় আসেন তিনি।

এরপরের ঘটনা ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়। জলপাইগুড়িতে সভা শেষে ফেরার পথে হেলিকপ্টারে সাময়িক বিঘ্নতা ঘটায় জরুরী অবতরণ করতে হয়েছিল হেলিকপ্টারটিকে। সেসময় কোমরে আঘাত পান মমতা। হাসপাতালে ভর্তি করলেও বেশিদিন থাকতে হয়নি তাকে। তবে ফিজিওথেরাপি নিতে হয়েছিল সেবার।

একই বছরের সেপ্টেম্বরে, স্পেন ও দুবাই সফরে গিয়েছিলেন তিনি। মাদ্রিদে পুরনো আঘাতের জায়গায় নতুন করে চোট পান সেবার। তখন মমতা দেশটির গণমাধ্যমে বলেছিলেন, তার পায়ের ভুল চিকিৎসা হয়েছিল। পরে ইন্টারভেনাস ফ্লুইড ইঞ্জেকশনও নিতে হয়েছিল।

সর্বশেষ, বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) নিজ বাড়িতেই পড়ে গিয়ে কপাল ও নাকে চোট পান মমতা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিনি পেছন থেকে ধাক্কা লাগার কারণে পড়ে গিয়েছিলেন। এজন্য তার কপালে তিনটি এবং নাকে একটি সেলাই করতে হয়েছে।

এদিকে, মমতার গুরুতর আহতের ঘটনায় তার সুস্থতা কামনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাহুল গান্ধিসহ অনেকে। নরেন্দ্র মোদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেলে লিখেন, আমি মমতা দিদির দ্রুত সুস্থতা ও সবসময় সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল লিখেছেন, এটা দেখে আমি হতবাক। দিদির দ্রুত আরোগ্যের জন্য দো’আ। ঈশ্বর ওনার মঙ্গল করুন।

তবে রাজ্য বিজেপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দীলিপ ঘোষের কথায় শোনা গেছে ভিন্ন সুর। দিলীপ বলেছেন, প্রশ্ন অনেক আছে। তবে অসুস্থ হয়েছেন, চোট লেগেছে, তাড়াতাড়ি সেরে উঠুন, এটাই আমরা চাইব। বহু লোক বহু প্রশ্ন করছেন। এটা তদন্ত করে দেখা উচিত। উনি ঘরের মধ্যেই কীভাবে চোট পেলেন? এগুলো ভাবা উচিত। উনি এই রাজ্যের এক নম্বর ব্যক্তি। ওনার দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।

উল্লেখ্য, বিধানসভা-পঞ্চায়েত-লোকসভা, পরপর তিনটি বড় নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই শারীরিক দুর্ঘটনা দেশটির জাতীয় ও রাজ্যস্তরের রাজনীতিতে টক অব দ্য টাউনে পরিনত হয়েছে।

/এমএইচআর


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply