দ্বিতীয় সেশনেই মুদ্রার উল্টো পীঠ দেখলো বাংলাদেশ। মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে ৫ উইকেট হারিয়ে লঙ্কানদের সংগ্রহ যেখানে ছিল ৯২ রান। সেখান থেকে চা বিরতির আগ পর্যন্ত লঙ্কানদের সংগ্রহ ৫ উইকেট হারিয়ে ২১৭ রান। দ্বিতীয় সেশনে কোনো সফলতা পায়নি বাংলাদেশের বোলাররা। অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস দু’জনই অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন।
শুক্রবার (২২ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। প্রায় ৯ বছর পর ঘরের মাঠে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলো বাংলাদেশ। এই টেস্টের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয় পেসার নাহিদ রানার।
টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। নিশান মাদুশকাকে ফেরান সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তার ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় লঙ্কান ওপেনারের ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটের পেছনে। তৃতীয় স্লিপে বাম দিকে হাত বাড়িয়ে দারুণ রিফ্লেক্সে ক্যাচ নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ বলে ২ রান করে ফেরেন মাদুশকা।
এদিন পিচ থেকে দারুণ সুইং আদায় করে নেন খালেদ। যার সুফল পেতে খুব একটা বেশি দেরি করতে হয়নি তাকে। কুশল মেন্ডিসকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় উইকেট এনে দেন তিনি। শরীর বরাবর আসা বাউন্সারে কাট করবেন নাকি ছেড়ে দেবেন এই দ্বিধায় শেষ পর্যন্ত ব্যাটে লেগে চলে যায় গালিতে। দুইবারের চেষ্টায় ক্যাচ নেন জাকির হাসান। ফেরার আগে ২ চারে ২৬ বলে ১৬ রান করেন মেন্ডিস।
কুশাল মেন্ডিসের পর একই ওভারে দিমুথ কারুনারাত্নকেও ফেরান খালেদ। অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করা ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন লঙ্কান ওপেনার। বলের লাইনে যেতে পারেননি তিনি, ব্যাট আর প্যাডে ফাঁক থেকে যায় অনেকটা। তীক্ষ্ণভাবে ভেতরে ঢুকে যাওয়া ডেলিভারিতে সেই ফাঁক দিয়ে আঘাত করে অফ স্টাম্পের চূড়ায়। ১ চারে ৩৭ বলে ১৭ রান করে ফেরেন কারুনারাত্নে।
এরপর শান্তর অনবদ্য এক থ্রোতে রান আউটের ফাঁদে পড়েন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুউজ। ৭ বল খেলা ম্যাথুউজ ৫ রানের বেশি করতে পারেননি। ৪৭ রানে ৪ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা ৫৭ রানে হারায় তাদের পঞ্চম উইকেট। খালেদ আহমেদের তিন উইকেট শিকারের পর অবশেষে উইকেটের দেখা পেল নতুন কেউ। শরিফুল ইসলামের বলে লেগ স্লিপে মিরাজের হাতে ক্যাচ হন দীনেশ চান্দিমাল।
ক্রিজে এসে প্রথম বলেই ফিরতে পারতেন কামিন্দু মেন্ডিস। শরিফুল ইসলামের বলে দ্বিতীয় স্লিপে তার ক্যাচ ছাড়লেন মাহমুদুল হাসান জয়। অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি ড্রাইভ করার চেষ্টায় কামিন্দুর ব্যাটের বাইরের কানায় লাগে। ক্যাচ নেয়ার মতো উচ্চতায়ই যায় জয়ের হাতে। তবে প্রথম দফায় হাতে নিলেও রাখতে পারেননি তিনি।
৫৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ধনঞ্জয়া-কামিন্দু প্রতিরোধ লড়াই শুরু করেছেন। তাতে রান তোলার গতিও বেড়েছে বেশ। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমেই কামিন্দুর ব্যাটে দ্বিতীয় ফিফটি। এই কামিন্দু মেন্ডিস অবশ্য প্যাভিলিয়নে ফিরতে পারতেন ডাক হয়ে। যদি না শরিফুল ইসলামের বলে সেকেন্ড স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা মাহমুদুল হাসান জয়ের হাত থেকে বল ফস্কে যেত। শুরুতেই জীবন পাওয়া কামিন্দু এরপর আর কোনোপ্রকার ভুল করেননি, দায়িত্ব নিয়ে দলকে টেনেছেন। নিজের ইনিংস বড় করেছেন।
ওয়ানডে মেজাজে ব্যাত চালিয়ে পরপর দু’জনেই পেয়ছেন ফিফটির দেখা। ৫২ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, ৫১ বলে ফিফটি আসে কামিন্দু মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। ৬ষ্ঠ উইকেট জুটিতে তাদের শতরান পূর্ণ হয় ৯৬ বলে।
/আরআইএম
Leave a reply