দুইশর আগেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ, বড় লিড লঙ্কানদের

|

নবম উইকেটে জুটি গড়েন শরিফুল-খালেদ

সিলেট টেস্টে বাংলাদেশ দল প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতা থেকে বের হতে পারেনি। শুক্রবার প্রথম দিনের শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। ১০ ওভার ব্যাট করা বাংলাদেশ রান তুলেছিল ৩২। সেই ব্যাটিং ব্যর্থতা থেকে বের হতে পারল না স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় দিনেও নিয়মিত উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রানেই থেমেছে স্বাগতিকদের ইনিংস। লঙ্কানরা লিড পেয়েছে ৯২ রানের।

তিন উইকেট হারানো বাংলাদেশ শনিবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনেও হারায় তিন উইকেট। মাহমুদুল হাসান জয়, শাহাদাত হোসেন দিপু ও লিটন দাস উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শেষদিকে খালেদ-শরিফুল লিড কমানোর আশা দেখালোও বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি এই জুটিও।

স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে শুক্রবার ‘নাইটওয়াচম্যান’ হিসেবে নামা তাইজুল ইসলাম দ্বিতীয় দিন কিছুটা প্রতিরোধ করতে পেরেছিলেন। বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসটি এসেছে তার ব্যাট থেকে। অর্ধশতকের কাছাকাছি গিয়েও ৪৭ রানে রাজিথার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি।

তিন উইকেটে ৩২ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আগের দিন শেষ বিকেলের ধাক্কা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বড় জুটি দরকার ছিল স্বাগতিকদের। ৯ রানে দিন শুরু করা ওপেনার জয়ের কাছ থেকে বড় ইনিংসের প্রত্যাশা ছিল সকলেরই। তবে তিনি সে প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি। গতিময় বোলার লাহিরু কুমারার প্রথম বলেই জয়ের ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে ক্যাচ চলে যায়। এতে ইতি ঘটে তার ৪৬ বলে ১২ রানে উইকেটে টিকে থাকার লড়াই।

জয়কেই ফিরিয়েই থামেননি লাহিরু কুমারা। এরপর ফিরিয়েছেন তরুণ শাহাদাত হোসেন দিপুকেও। দিপু শুরু থেকেই অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ভুগছিলেন। শেষ পর্যন্ত ২২তম ওভারে বাড়তি বাউন্সে সেই অফ স্টাম্পের বাইরের বলেই তাকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন কুমারা। ২৬ বলে ১৮ রান করে স্লিপে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরেছেন দিপু। এতে মাত্র ৮৩ রানেই ৫ উইকেট হারায় শান্তর দল।

এমন বিপর্যয়ের মধ্যে দলের রানকে একশর ওপারে নিতে সাহায্য করেন তাইজুল ও লিটন দাস। সাতে নেমে ভালো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন লিটন। ইনিংসের শুরুতে সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে দেখা যায়নি তাকে। পায়ের ওপরের দুটি বল ‘ফ্লিক’ এবং পুল করে আরও দুটি বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন। তবে কুমারার আঘাতে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন। ভালো লেন্থে ভেতরে আসা এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ব্যাটার। ফেরার আগে ৪৩ বলে ২৫ রান করেন তিনি। লিটনের বিদায়ে তাইজুলের সঙ্গে তার ষষ্ঠ উইকেটে ৪১ রানের জুটি ভেঙেছে।

১২৪ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দলীয় ১৪০ রানে ফিরে যান সেট ‘ব্যাটার’ তাইজুলও। নিজেকে ‘সেরা’ অলরাউন্ডার প্রমাণের সুযোগ ছিল মেহেদী মিরাজের সামনে। তবে তিনিও ফিরেছেন ব্যর্থ হয়ে। কাসুন রাজিথার বলে বড় শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন মিরাজ। তার বিদায়ে ১৪৭ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।

সেখান থেকে দুই পেসার খালেদ আহমেদ ও শরিফুল ইসলামের ব্যাটে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে বাংলাদেশ। লঙ্কান বোলারদের ভালোই জবাব দিচ্ছিলেন এই দু’জন। এই জুটি ৩৫ বলে তোলে ৪০ রান। ৪৭তম ওভারে প্রবাথ জয়সুরিয়ার বোলে ১৯ রান তোলে এই জুটি। ওই ওভারে শরিফুল দুইটি ও খালেদ একটি ছক্কা মারেন। শরিফুল ১৫ রানে ফেরেন। আর শেষ ব্যাটার হিসেব খালেদ ২২ রান করে ফিরেছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬৮ ওভারে ২৮০ (কামিন্দু ১০২, ধনাঞ্জয়া ১০২, করুণারত্নে ১৭, কুশল মেন্ডিস ১৬; খালেদ ৩/৭২, রানা ৩/৮৭, তাইজুল ১/৩১, শরিফুল ১/৫৯)।

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৫১.৩ ওভারে ১৮৮ (মাহমুদুল ১২, জাকির ৯, মুমিনুল ৫, নাজমুল ৫, তাইজুল ৪৭, শাহাদাত ১৮, লিটন ২৫, মিরাজ ১১, শরিফুল ১৫, খালেদ ২২, নাহিদ ০*; বিশ্ব ফার্নান্দো ৪/৪৮, রাজিথা ৩/৫৬, কুমারা ৩/৩১, জয়াসুরিয়া ০/৩৩, ধনাঞ্জয়া ০/৪)

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply