নিজস্ব প্রতিবেদক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
ঢাকা-চট্রগ্রাম রেলপথে সুবর্ণ এক্সপ্রেস বিরতিহীন ট্রেনে করে ঢাকা থেকে রবিবার বিকালে চট্টগ্রামে ফিরছিলেন ট্রেন যাত্রী জান্নাতুন আক্তার। মাঝপথে উঠে তার প্রসব বেদনা। রবিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে জান্নাতুন নামে ওই যাত্রী কন্যা সন্তানের জন্ম দেন।
ট্রেনটি তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ রেল স্টেশন অতিক্রম করার পর তালশহর স্টেশনের কাছাকাছি ছিল। পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনটির অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি দিয়ে মা ও সন্তানের চিকিৎসা দেয়া হয়। এগিয়ে আসেন ট্রেনেই থাকা এক চিকিৎসক। শিশুটির জন্য অনির্ধারিত ৫ মিনিটের যাত্রা বিরতি দিল বিরতিহীন এই ট্রেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেল স্টেশন সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যা ৬টার দিকে ট্রেনটি কিশোরগঞ্জে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার সময় ‘ড’ বগিতে থাকা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী এলাকার মো. ইকবালের স্ত্রী জান্নাতুন প্রসব ব্যথা অনুভব করেন। এ সময় ওই বগিতে থাকা এক চিকিৎসক এগিয়ে এসে তাকে স্বাভাবিক প্রসব করান।
তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ট্রেনের দুই পরিচালক মো. জুবায়ের, নুরুল আমিন লিটন ও চালক মো. রাসেল মুন্সী, সহকারী চালক মো. মেজবাহ উদ্দিনকে জানানো হয়। তাদের মাধ্যমে ঢাকায় রেলওয়ের কন্ট্রোলকে অবগত করা হয়। কন্ট্রোলের নির্দেশে সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি দেয়। মা ও সন্তানকে ২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
নবজাতকের বাবা মো. ইকবাল জানান, আগামী মাসে সন্তানের প্রসবের তারিখ ছিল তার স্ত্রীর। তবে ট্রেনে করে যাওয়ার পথে প্রসব ব্যথা ওঠে। তাৎক্ষণিকভাবে এক চিকিৎসক তার স্ত্রীর সন্তান প্রসব করান। এরপর মা ও সদ্যোজাত মেয়ের জরুরি চিকিৎসার জন্য ব্রাহ্মণাবড়িয়া হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়ে তারা সাথে সাথেই বেরিয়ে গেছেন। রাতের তূর্ণা নিশিথা ট্রেনে তারা চট্টগ্রাম চলে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স স্মৃতি রানী রায় জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ট্রেনে জন্ম নেয়া কন্যা শিশুটিকে ক্লোরো হেক্সিটিন দেয়া হয়। নাভিতে দেয়া চুলের ক্লিপের বদলে কর্ড ক্লিপ লাগিয়ে দেয়া হয়। মা ও মেয়ে দুজনই এখন সুস্থ আছে।
২৫০ শয্যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. তাজুল ইসলাম জানান, ট্রেনেই শিশুটির জন্ম হয় বলে জানানো হয়েছে। নিয়ে আসার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মা ও মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি থাকার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা সেটা না করে চলে গেছেন।
এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশনে মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে কন্ট্রোল থেকে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি দিয়ে মা ও মেয়েকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। ট্রেনটি মাত্র ৫ মিনিট যাত্রাবিরতি দিয়ে আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ছেড়ে যায়।
/আরআইএম
Leave a reply